কলকাতা, ২৩ অক্টোবর: একে কোভিডের ঘায়ে এবারের পুজো ম্লান, তায় গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো চেপে বসেছে ভারী বৃষ্টিপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ (West Bengal Weather Update)। ঝড়, ঝঞ্ঝা, বৃষ্টির পরিস্থিতি থাকলেও কোনওক্রমে ঝিরিঝিরির উপরে দিয়ে ষষ্ঠী কেটেছে। তবে সপ্তমীতে পুজোর আনন্দের টিকে থাকা ছিটোফোটাও মাটি করতে কতটা বৃষ্টি হবে তা জানতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে বঙ্গোপসাগরের গভীরে থাকা নিম্নচাপের গতিবিধির উপরে। যতদূর জানা গিয়েছে শুক্রবার দুপুর নাগাদ বঙ্গোপসাগরের উদ্ভূত নিম্নচাপ পাথরপ্রতিমা হয়ে স্থলভাগে ঢুকবে। তারপর সেই ঝড়বৃষ্টি বসিরহাট হয়ে চলে যাবে বাংলাদেশে। একেবারে আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ। এর প্রভাবে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, কলকাতা ও পূর্বমেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
শুধু বৃষ্টিই নয়, সঙ্গে থাকবে ঝোরো হাওয়ার দাপট। এমনিতেই এবার বর্ষাকালীন বৃষ্টি যথেষ্ট হয়েছে। তার জেরে খালবিল, নদীনালা সবই টইটম্বুর। এই পরিস্থিতি নতুন করে ভারী বৃষ্টিপাত হলে সেই অতিরিক্ত জল যে কোথায় যাবে তাই কেউ জানে না। এমনিতেই সুন্দরবনের নদীবাঁধের পরিস্থিতি শোচনীয়। কলকাতাজুড়ে পুজোর মণ্ডপ সেজে উঠেছে। এমতাবস্থায় আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামলে সত্যিই যে রক্ষা নেই। কয়েকঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জল দাঁড়িয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সুন্দরবনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেখানকার বাসিন্দাদের আজ বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এমনিতে গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ নিম্নচাপ ছিল সাগর দ্বীপ থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, মোটামুটি দুপুর নাগাদ নিম্নচাপ বাংলার সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী উপকূল হয়ে স্থলভাগে ঢুকবে। অঞ্চলটি পাথরপ্রতিমা হওয়ার জোর সম্ভাবনা। তবে রাতে মৌসম ভবন জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের শক্তি বাড়িয়ে অতি গভীর নিম্নচাপ হওয়ার সম্ভাবনা কমছে। এমনিতে গত বছর নভেম্বর এবং মে মাসে পর পর দু'টি ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবনে আছড়ে পড়ে। অক্টোবর-নভেম্বর এমনিতেই ঘূর্ণিঝড়-প্রবণ মাস। এই নিম্নচাপটিও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে অল্প সময়ের মধ্যে বিরল দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হত বাংলাকে। আরও পড়ুন-West Bengal Weather Update: ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, পুজো কমিটিগুলিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ সরকারের
বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্ট সঢ্জীব ব্যানার্জি জানিয়েছেন, গতকালের সুস্পষ্ট নিম্নচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে তা কলকাতা থেকে ৩৫০ কিমি দক্ষিণ, দক্ষিণ পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৮৯০ কিি দক্ষিণ, দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।