তমলুক, ১৮ জানুয়ারি: নন্দীগ্রাম জনসভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি-
'ভবানীপুর এবং নন্দীগ্রাম দু'টি কেন্দ্র থেকেই দাঁড়াবো'
'নন্দীগ্রাম আমার জন্য লাকি জায়গা। আজ নন্দীগ্রাম থেকে আমি ঘোষণা করছি, ২০২১-এ তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। নন্দীগ্রাম থেকেই শুরু হল জেতার পালা। প্রতি সিটেই তৃণমূল জয়লাভ করবে। এখনই নাম বলছি না, নন্দীগ্রাম সিটে ভালো মানুষ দেব। যারা আপনাদের কাছে থেকে কাজ করবে।'
'বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। কালো হয়ে ঢুকবে, সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে'
'নন্দীগ্রামে থেকে আমি লড়তে চাই'
'নন্দীগ্রামে মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতাল করে দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব নন্দীগ্রামের আন্দোলনকারীদের পরিবারকে ১০০০ টাকা করে পেনশন করে দেব।'
'নন্দীগ্রামে পানীয় জলের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। উপকৃত হবেন ১২ লক্ষের বেশি মানুষ।'
'হলদিয়া-তমলুকের ট্রেন লাইন আমি করেছি।'
'সোনাচূড়াতে টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট হবে।'
'আজকে নন্দীগ্রাম আসার সময় শুভেচ্ছা জানান কবীর সুমন। আমি কোনও একটা দিনও ভুলিনি। আমি আবু তাহের থেকে সবার বাড়ি, নন্দীগ্রামের স্কুল-কলেজ, বাজার, হাসপাতাল সব চিনি। নন্দীগ্রামের সাথে আমার আত্মার টান, যা চিরকাল ছিল, থাকবে।'
'যখন আমি নন্দীগ্রামে পৌঁছই অনেক বাধা টপকে, তখন এখানে আমি কাউকে দেখতে পাইনি। আমি কাউকে জ্ঞান দেব না। নন্দীগ্রাম আন্দোলন কে করেছে! সেইসব দিন আমি দেখেছি।'
'অনেকে বড় বড় কথা বলে! পেট্রোল বোমা দিয়ে আমাকে জ্বালিয়ে মারার চেষ্টা করেছিল।'
'অনেকে বড় বড় কথা বলে। আন্দোলন তৈরি হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে। তফশিলি কন্যা তাপসী মালিককে লক্ষ্মীপুজোর পরদিন পুড়িয়ে মারা হল। তারপরই এখানে আন্দোলন শুরু হয়। নয়াচরের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে। এরপর ১৪ মার্চ গুলি চলে। আমার গাড়িতেও বুলেট লাগে।'
আজ সভায় উপস্থিত নেই অধিকারী পরিবার। আবু তাহের, মানস ভুঁইঞা উপস্থিত। পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক বিধায়কই এসেছেন। অজিত মাইতি, বীরেন রায়, শিউলি সাহা প্রমুখ এসেছেন।
আজ সভার শুরুতেই নন্দীগ্রাম সংঘর্ষে ১০ জন নিখোঁজের পরিবারকে সরকারি অনুদান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পরিবার পিছু তুলে দেওয়া হয় ৪ লাখ টাকার চেক।
আজ নন্দীগ্রামে (Nandigram) মমতা ব্যানার্জির সভা। নন্দীগ্রাম জনসভায় থাকবেন না শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু। তাঁদের আমন্ত্রণও জানায়নি তৃণমূল। ২০০৭ সাল থেকে এক যোগে সভা করেছন অধিকারী পরিবার এবং মমতা ব্যানার্জি। মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে অধিকারী পরিবারের সম্পর্কের ভাঙনের শুরু ১৯ ডিসেম্বর। শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যে বিজেপিতে। খাতায়-কলমে এখনও নাম রয়েছে শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর, তবে দলের কোনও পদে নেই এই দুই তৃণমূল নেতা।
গত ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জির (Mamata Banerjee) সভার খবর পেয়ে পরের দিন সেখানে সভা করার কথা বলেছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে অখিল গিরি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় নন্দীগ্রাম দিবসে সেখানে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। তাই পরের দিনের নির্ধারিত সভাও বাতিল করে দেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও তিনি বলেছিলেন, দিদিমণি যেখানেই সভা করবেন। ঠিক পরের দিন সেখানে সভা করে তাঁর প্রত্যেকটি কথার হিসেবে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেবেন এই নব্য বিজেপি নেতা। বলাবাহুল্য, সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসে গেছে। আজ ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের বাসিন্দাদের মুখোমুখি হচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি। আগামী কাল মঙ্গলবার পাশের খেজুরির বিদ্যাপীঠ মাঠে মমতাকে বেগ দিতে হাজির হবেন একদা তাঁর শিষ্য শুভেন্দু অধিকারী। আরও পড়ুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদী’ বললেন যোগীর রাজ্যের এই মন্ত্রী
আজ শুভেন্দুর গড়ে তাঁরই বিরোধিতায় মুখর হবেন তৃণমূল নেত্রী। অন্যদিকে দক্ষিণ কলকাতায় টালিগঞ্জ মেট্রো থেকে রাসবিহারীর মোড় পর্যন্ত মমতা বিরোধিতায় মিছিল করবেন শুভেন্দু। দল বদলের পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, দক্ষিণ কলকাতার বিশেষ কিছু নেতা মন্ত্রীরাই দলের সমস্ত প্রসাদ খেয়ে বসে আছেন। শুভেন্দুর দলবদলের পরেই বাবা শিশির অধিকারীর ক্ষমতা খর্ব করেছে তৃণমূল। সাংসদ সৌম্যেন্দু অধিকারীকেও বিশেষ পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। আজ মমতার সভায় দুজনের কেউই আমন্ত্রিত নন। এমনিতে কয়েকদিন আগেই শিশিরবাবু দল বিরোধী মন্তব্য করেছেন। এই সভায় এসে তেমন কোনও কথা বললে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল হতে পারে। তাই যতক্ষণ সাংসদ পুত্রকে নিয়ে শিশির অধিকারী দলে রয়েছেন ততক্ষণ তাঁদের এড়িয়ে চলার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।