কলকাতা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: মঙ্গলবার ভোরে প্রয়াত হয়েছেন বাংলার বর্ষীয়ান অভিনেতা তাপস পাল (Tapas Pal)। তাঁর মৃত্যুর জন্য CBI-কে দায়ী করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি (TMC MP Kalyan Banerjee)। ইটিভি ভারতের খবর অনুযায়ী, কল্যান ব্যানার্জির অভিযোগ, CBI-র জন্য তাপস পালের মৃত্যু হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই তাপস পালকে দিনের পর দিন জেরা করেছিল, সেই কারণেই তাপসের শরীর ভেঙে পড়ে ও অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ আজ ভোরে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাপস পালের৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর৷
তাপস পালের মৃত্যু নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কল্যাণ ব্যানার্জি বলেন, ‘‘অত্যন্ত খারাপ লাগছে৷ তাপস শারীরিকভাবে খুব কষ্ট পেয়েছে৷ ২০০১ সাল থেকে বিধায়ক ছিল৷ রোজভ্যালির ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল৷ CBI দিনের পর দিন জেরা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে৷ একটা মানুষকে চোর বলেছে, অথচ তা প্রমাণ করতে পারেনি৷ ক্রিমিনাল কেস শুরু করে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখলে যে মানসিক যন্ত্রণা হয়, তার ফলেই ওর মৃত্যু হল৷ মানসিক যন্ত্রণা থেকে শরীরে যে কষ্ট হয়, তা অস্বীকার করা যায় না ৷ বিরোধীরা এখন খুব খুশি হবে৷ ওরা এটাই চেয়েছিল৷" আরও পড়ুন: Actor Chiranjait On Tapas Pal: ‘ভাই হারালাম মনটা ভেঙে গেল’, তাপস পালের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ চিরঞ্জিৎ, কেঁদে ফেললেন দেবশ্রী, কী বললেন অন্যরা?
তাপস পালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা টলিউড। সহকর্মীকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন অভিনেত্রী সাংসদ দেবশ্রী রায়(Debashree Roy)। কাঁদতে কাঁদতেই জানালেন, “আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। একটার পর একটা ছবি করেছি আমরা। কী বলব বলুন। আর কিছু বলার নেই।” সাত সকালে এমন খবর পেয়ে হতবাক অভিনেতা চিরঞ্জিত। তিনি বলেন, “ভীষণ সুন্দর স্মৃতি। আমাদের সময়টা বড় সুন্দর ছিল। সবাই মিলেমিশে হই হই করে কাজ করতাম। সেই সময় সব ছবিই হিট হত। আর ও তো সুপারস্টার ছিল। আমাকে যদি কেউ উত্তম কুমারের অভিনীত ছবি করতে বলেন, তবে ভেবে দেখব। কিন্তু তাপস পাল অভিনীত ‘দাদার কীর্তি’ বা ‘সাহেব’ কখনওই নয়। এই দুটি চরিত্রে তাপসের অভিনয় কোনওদিন ভুলব না। তরুণ মজুমাদারের ছবি দিয়ে ও অভিনয় জীবন শুরু করেছিল। আজ তো ভাই হারালাম। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। ওর জীবনের শেষটাই ভীষণ খারাপ গেল। খুব কষ্টের। এত উজ্জ্বল ছিল ছেলেটা, মনটা ভেঙে গেল।”
অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী সেন ও তাপস পাল একই আবাসনের বাসিন্দা। প্রতিবেশীই বলতে পারেন। শুধু ছবিতে একসঙ্গে কাজ করা নয়। পাশাপাশি থাকার কারণে দুই পরিবারের মধ্যে নিত্য যাতায়াত ছিল। চলতে ফিরতে দেখা হত। কুশল বিনিময় চলত। পুজোর সময় একই সঙ্গে খাওয়া আড্ডা। ইন্দ্রাণীর বাড়িতে আসতেন তাপস পাল। ইন্দ্রাণীও যেতেন তাঁর বাড়িতে। এদিনের খবর শুনে হকচকিয়ে গিয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “১৫ বছর ধরে আমরা একই আবাসনের বাসিন্দা। উনি আমার সহ অভিনেতা শুধু নন, প্রতিবেশীও। সবসময় খোঁজখবর নিতাম। অসুস্থ ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। তাপসদা খুব ভুগতেন। তবে তিনি যে মুম্বইতে চিকিৎসার জন্য গেছিলেন, তা জানতাম না। এসব ভেবে খুব খারাপ লাগছে।”