দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, ৮ নভেম্বর: শক্তি বাড়িয়ে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল (Bulbul)। আবহাওয়া দফতর থেকে প্রাপ্ত শেষ খবর অনুযায়ী, বুলবুল বর্তমানে সাগরদ্বীপ (Sagar Island) থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। আজ শুক্রবার বিকেল থেকেই রাজ্যে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর ( India Meteorological Department)। ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে বলেও জানা গিয়েছে। আগামীকাল এবং পরশু ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির (Rain) পূর্বাভাসও জারি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সমুদ্র সৈকতে রয়েছে টানা নজরদারি। সমুদ্রে (Sea) নামতে বারণ করা হয়েছে পর্যটকেদর (Tourists)। সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মত্স্যজীবীদের। এদিকে, বুলবুল মোকাবিলায় তত্পরতা তুঙ্গে সুন্দরবনেও। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা সদর আলিপুরে শুক্রবার জেলাশাসক পি উলগানাথনের নেতৃত্বে দুটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হতে চলেছে। সেখানেই বুলবুলের সঙ্গে লড়াইয়ের নীল নকশা তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত উপকূলবর্তী সমস্ত ব্লক অফিস এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে কন্ট্রোল রুম (Control Room) খোলা হয়েছে। ঝড় মোকাবিলায় কোনও ফাঁক রাখছে না প্রশাসন। খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১০ নভেম্বর রবিবার ভোর রাতে সাগরদ্বীপে আছড়ে পড়বে এই ঝড়। জেলার উপকূলবর্তী ব্লক এলাকায় প্রায় ৩০০ ফ্লাড সেন্টারকে তৈরি রাখা হয়েছে। সেচ দফতর, বন দফতর, পুলিশ কর্মীদেরকেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার (Food) এবং ত্রিপল মজুত রাখা হয়েছে ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতে। ঝড়ের সময় সুন্দরবনের ফেরি পরিষেবাও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোটা এলাকায় চলছে মাইকিং। ঝড় আছড়ে পড়ার সময় মানুষজনকে বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করা হচ্ছে। উপকূলবর্তী নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। আরও পড়ুন: Cyclone Bulbul: শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, উপকূলের জেলাগুলিতে জারি সতর্কতা
VSCS BULBUL near 17.2°N/87.6°E abt 350 km SSE of Paradip at 0830 IST. To cross West Bengal - Bangladesh Coasts between Sagar Islands (West Bengal) and Khepupara (Bangladesh), across Sunderban delta during the early hours of 10th November as a Severe Cyclonic Storm. pic.twitter.com/O7sQQUN4Tj
— India Met. Dept. (@Indiametdept) November 8, 2019
গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে উপকূল এলাকায় জেলা থেকে একজন এডিএমকে ইতোমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে মেঘে ঢেকে রেখেছে সুন্দরবন এলাকা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বকখালি ও গঙ্গাসাগরের উপকূলে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ (Police)। পরিস্থিতির উপর নজর রেখে আগামী কয়েকদিন সুন্দরবনের নদী পারাপারে ভেসেল ও লঞ্চ পরিষেবাও নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ প্রশাসন। ৬ টি NDRF এবং একটি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দলও মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়। ১০ বছর পর এই প্রথম কোনও ঘূর্ণিঝড়ের বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় বর্তমানে সাগরদ্বীপের দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ৩৫০ কিমি দূরে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৬৩০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।