বারাকপুর, ৫ অক্টোবর: ফের উত্তপ্ত বারাকপুর। রবিবার সন্ধ্যারাতে টিটাগড় থানার ঢিলছোঁড়া দূরত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই গুলিবিদ্ধ হলেন বারাকপুরের ডাকসাইটে বিজেপি নেতা তথা সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ডানহাত মণীশ শুক্লা। হাওড়ার দলীয় সভা সেরে সবে বিটিরোড লাগোয়া ওই পার্টি অফিসে ঢুকছিলেন মণীশ। সেই সময়ই বাইকে চড়ে ঘঠনাস্থলে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে উধাও হয়ে যায় দুষ্কৃতীর দল। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় বিএন বসু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন ঘড়িতে আটটার কাঁটা কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে বিজেপি নেতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বাইপাসের লাগোয়া এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন (Manish Shukla Murder)। এই ঘটনায় সোমবার ১২ ঘণ্টা বারাকপুর বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। আরও পড়ুন-Barrackpore: টিটাগড়ে বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে গুলিবিদ্ধ মণীশ শুক্লাউল্লেখ্য, টিটাগড় থেকে ইছাপুর পর্যন্ত মণীশ শুক্লার দাপট রয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। বাম জমানার শেষ দিকে বারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদ ভোট ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চলেছিল গুলিও। সেই সময় থেকেই বারাকপুরের রাজনীতিতে মণীশ পরিচিত নাম। শিল্পাঞ্চলের জনতা তাঁকে অর্জুন সিংয়ের লোক হিসেবেই জানেন। অর্জুন বিজেপি-র সাংসদ হওয়ার পর গত বছর জুন মাসে মণীশ বিজেপিতে যোগ দেন।লোকসভার পর থেকেই উত্তপ্ত বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি এমন হয় যে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে বদলি করে নবান্ন। মাঝে কয়েক মাস বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও এদিন ফের খুনের ঘটনা ঘটল।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের টুইট
ACS Home @MamataOfficial and DGP @WBPolice have been summoned at 10 am tomorrow in the wake of worsening law and order situation leading to dastardly killing of Manish Shukla, Councillor, Titagarh Municipality in political party office.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 4, 2020
এদিকে টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর মণীশ শুক্লা খুনের ঘটনায় অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তলব করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবার বেশি রাতে টুইট করে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান লেখেন, আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নে সোমবার সকাল ১০টায় তাঁদের রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি। এদিকে পেশায় আইনজীবী ও বিজেপি-র বারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সদস্য মণীশ শুক্লা খুনে দারুণ ক্ষিপ্ত সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গেই মণীশ সারাদিন হাওড়ায় ছিলেন। কর্মসূচি শেষে অর্জুন যান কলকাতায়। মণীশ ফিরে আসেন টিটাগড়ে। অর্জুনের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন গুলি চালিয়েছে। আর এই গোটা অপারেশনের পিছনে রয়েছে পুলিশ। যে জায়গায় মণীশকে গুলি করা হয়েছে তার ঢিল ছোড়া দূরত্বে টিটাগড় থানা। এইরকম একটি জায়গায় কী ভাবে ১৫-১৬ জন জড়ো হল, গুলি চালাল এবং পালিয়ে গেল– তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বিরোধীদের বক্তব্য বাংলায় যে আইনশৃঙ্খলা ব্যাপারটাই লাটে উঠে গেছে এটা তার উদাহরণ। থানার সামনে যদি এই ঘটনা হয় তাহলে থানা থেকে দূরের এলাকায় কী চলছে।