কলকাতা, ২৩ জানুয়ারি: নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) মূর্তির (statue) হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিজেপির পতাকা (BJP Flag)। এই ছবি ঘিরেই এখন জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় এই ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল। অনেকেই এই কাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ। সবচেয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি তথা নেতাজির নাতি চন্দ্র কুমার বসু (Chandra Bose)। তিনি দলে থাকবেন কি না তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন। দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নানা মন্তব্য থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন চন্দ্র বসু। তিনি জানিয়েছেন, যদি দল নাগরিকত্ব আইন (CAA) পরিবর্তন না করে তবে বিজেপিতে থাকার সিদ্ধান্ত তাঁকে পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে।
বঙ্গ বিজেপির সহসভাপতি বলেন, "নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু অবশ্যই রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। তবে তিনি দলীয় রাজনীতির থেকে অনেক উপরে ছিলেন। আমি মনে করি না যে কোনও রাজনৈতিক দল আজ নেতাজি সুভাষ বসুর যোগ্য। নেতাজির মূর্তিতে পতাকা লাগিয়ে কোনও দল নেতাজির মালিক হতে পারে না। এটা অত্যন্ত অনুচিত কাজ এবং আমি এর নিন্দা করছি। আমি মনে করি রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবিলম্বে বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।" আরও পড়ুন: Netaji Subhas Chandra Bose Jayanti 2020: জন্মদিনে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির, বাংলায় টুইট করে শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ
সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে নামে বিক্ষোভকারীদের কুকুরের মতো গুলি করে মারার কথা বলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সেই মন্তব্যেরও সমালোচনা করনে চন্দ্র বসু। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়েও তিনি আপত্তি তুলেছেন। তিনি বলেন, "কয়েকটি পরিবর্তনের করলে আমি এই আইন সমর্থন করব মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন যেসব উদ্বাস্তুরা ধর্মীয় কারণএ নিপীড়িত তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত। গান্ধীজি কোনও ধর্মের কথা উল্লেখ করেননি। তিনি নিপীড়িতদের সকলকেই উদ্বাস্তু বলেছিলেন। তাই গান্ধীজিকে যদি অনুসরণ করতে হয় তবে তাঁর কথা মেনে চলা উচিত।" তিনি আরও বলেন, "ভারত সরকার নিপীড়িত ব্যক্তিদের ভারতে নাগরিকত্বের জন্য বিবেচনা করে CAA-র সংশোধন করলে পুরো বিরোধী প্রচার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই খারিজ হয়ে যাবে।"
চন্দ্র কুমার বসু বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বদা বলে গেছেন যে সিএএ ধর্মের সঙ্গে জড়িত নয়। সুতরাং যদি এটি কোনও ধর্মের ভিত্তিতে না হয় তবে আমি মনে করি যে আমাদের এটি সম্পর্কে স্বচ্ছ এবং খুব সুনির্দিষ্ট হওয়া দরকার। এ নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। আমি যখন ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছিলাম। নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছিল যে আমি নেতাজি সুভাষ বসুর আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করব, যা একেবারে আলাদা এবং ধর্মনিরপেক্ষ। আমি নেতাজির নির্দেশ অগ্রাহ্য করব না। এটি এখনও রয়েছে। আর যদি তা না থাকে তবে বিজেপিতে আমার ভবিষ্যতের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।" তিনি এর আগেও বলেছিলেন যে সরকারের উচিত CAA নিয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।