দিদিকে বলো-য় মানুষের সাড়ায় খুশি মমতা ব্যানার্জি। (Picture Credits: Twitter, PTI)

শিলিগুড়ি, ২৪ ফেব্রুয়ারি: শনিবার বিকেল। হঠাৎই বাড়ির সামনে দুধসাদা গাড়ি এসে থামল। শিলিগুড়ির চম্পাসারির সরকার পরিবার তখনও বুঝে উঠতে পারেননি ওই গাড়িতে রয়েছেন স্বয়ং পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব (Gautam Dev)। যখন ঘোর কাটল তখন মন্ত্রী সরকার পরিবারের শুভঙ্কর সরকারের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন এক মুখবন্ধ খাম। খাম খুলতেই আনন্দে দুচোখ ভরে এল শুভঙ্করের। এই খাম যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। চোখের পলকেই বদলে গেল জীবন। মন্ত্রীর দেওয়া খামে রয়েছে নিরাপদ জীবনের আশ্বাস। বাবা মারা যাওয়ার পর যে চাকরির আর্জি নিয়ে সরকারি অফিসের দুয়ারে দুয়ারে জুতোর সুকতলা খুইয়েছেন শুভঙ্কর, সেই চাকরি বাড়ি বয়ে খাম বন্দী হয়ে এসেছে তাঁর কাছে!

কিন্তু কীভাবে ঘটল এই চমৎকার? সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে ‘দিদিকে বলো’তে (Didi Ke Bolo) নিজের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তাতেই হল কামাল। গতকাল রবিবার পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী গৌতম দেবের অফিসে বসে সে কথাই জানান তিনি। মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “আমার কাছে শুভঙ্কর আগেই এসেছিলেন। আমি সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তবে সেসময় কোনও কারণে কাজ হয়নি। পরে ‘দিদিকে বলো’তে উনি অভিযোগ জানান। নবান্নের নির্দেশে তাঁকে কাজে যোগদানের জন্য চিঠি তুলে দিয়েছি।” শুভঙ্করবাবু জানান, “দীর্ঘদিন ঘুরে আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিই। কোনও কাজ হবে ভেবে অভিযোগ করিনি। তাতে এভাবে সমস্যার সমাধান হবে, তা ভাবতে পারিনি। মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবো।” কর্মরত অবস্থায় বাবা সুধাংশুবাবু মারা গিয়েছেন পাঁচ বছর আগে। তিনি জলদাপাড়া টুরিস্ট লজের কর্মী ছিলেন। সেই সূত্রে চাকরির দাবি জানিয়েছিলেন শুভঙ্কর। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে বিভিন্ন জায়গায় ফাইল নিয়ে ঘুরে শিকে ছেঁড়েনি। গিয়েছিলেন পর্যটন ন্ত্রী গৌতম দেব এর কাছে। তিনি আশ্বাস দিলেও তাতেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। শেষমেষ হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে কোনওরকমে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর জনসংযোগের কর্মসূচি ‘দিদিকে বলো’র প্রচার শুনে সেই নম্বরে তার দুরবস্থার কথা জানিয়েছিলেন।স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধা মাকে নিয়ে কীভাবে কোনও রকমে জীবন যাপন করতে হচ্ছে সেই দুর্দশার কাহিনী তুলে ধরেছিলেন তিনি ‘দিদিকে বলো’–তে ফোন করে। সেখানকার আধিকারিকরা তাঁর সমস্ত বিবরণ এবং বক্তব্য টুকে নিয়েছিলেন। তবে তাতে যে কাজ হবে, সেটা ভাবতে পারেননি ওই যুবক। শেষ পর্যন্ত আর্জি জানানোর চার মাসের মধ্যে ওই এক ফোনেই হলো কাজ। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমে চাকরি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গত শনিবার ই তাঁর বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাপত্র এবং জয়েনিং লেটার তুলে দেন গৌতমবাবু। আরও পড়ুন: Polba Accident: ঋষভের বাবাকে ফোন করে 'পাশে থাকার আশ্বাস' মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির

তবে পাকাপাকিভাবে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতায় (Kolkata) যেতে বলা হয়েছে তাঁকে। দু’ একদিনের মধ্যেই তিনি কলকাতায় যাবেন বলে জানিয়েছেন।