বেঙ্গালুরু, ২৮ আগস্ট: Chandrayan 2 Is Now More Near To Moon: অপেক্ষার আর মাত্র ১১ দিন। বুধবার চাঁদের কক্ষপথে তৃতীয় বার জ্বলে উঠল চন্দ্রযান টু এর ইঞ্জিন। কক্ষপথের দূরত্ব আরো দুটি ধাপ কমানো হয়েছে। চাঁদের আরও কাছে এগিয়ে গেল ভারতের চন্দ্রযান টু (Chandrayan 2)। ৭ সেপ্টেম্বর ধীরে ধীরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ম্যানজিয়াস- সি ও সিম্পেলিয়াস- এন ক্রেটারের মাঝে মোটামুটি এক সমতল জায়গায় অবতরণ করবে। বলা হয়, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা খুবই দুরূহ। জায়গাটি অনেকবেশি দুর্গম, ছোট বড় ক্রেটার ও নিম্নভূমিতে পূর্ণ। রয়েছে গভীর খাদ, ঢালু জমি, পাহাড়- পর্বত। এসব এড়িয়ে নিরাপদভাবে অবতরণ করা সম্ভব। সব কিছুকে উপেক্ষা করে ভারত হবে চতুর্থ দেশ যে কিনা ধীরে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে সক্ষম হবে। এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, চিনে ধীরে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। আজ ইসরো টুইটের মাধ্যমে জানায়,
Third Lunar bound orbit maneuver for Chandrayaan-2 spacecraft was performed successfully today (August 28, 2019) at 0904 hrs IST.
For details please visit https://t.co/EZPlOSLap8 pic.twitter.com/x1DYGPPszw
— ISRO (@isro) August 28, 2019
চাঁদে দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করতে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন আগে চেষ্টা করেনি। এপ্রিল মাসে ইজরায়েলের বেরেসিট মহাকাশযান এই এলাকায় অবতরণ করতে গিয়ে ভেঙে পড়েছিল। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি শেষ অব্দি এই অভিযান বাতিল করে। চিন অবশ্য ভারতের আগে ৩ জানুয়ারি তাদের মহাকাশযান চ্যাং ই৪ চাঁদের যে দিকটা পৃথিবী থেকে কখনও দেখা যায় না, সেই পিঠের দক্ষিণ মেরু এলাকার সুবিশাল আইটকেন বেসিনের ভিতরের বেশ বড়সড় ভন কারম্যান ক্রেটারের মধ্যে অবতরণ করাতে সক্ষম হয়েছিল। চন্দ্রযান টুকে নামানো হবে মেরুর আরো অনেকটা কাছে।
অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা (Andhra Pradesh Sriharikota) থেকে দুপুর ২.৪৩ মিনিটে সফল উত্ৎক্ষেপণ হয় 'চন্দ্রযান ২'। চন্দ্রযান-২-এর অভিযানে খরচ হয়েছে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা। চন্দ্রযান-টু উৎক্ষেপণের মূল উদ্দেশ্য, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর রহস্যের সন্ধান করা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই দক্ষিণাংশেই মিলতে পারে জল ও জীবাশ্মের সন্ধান। ইতিমধ্যে চন্দ্রপৃষ্ঠের ৪,০০০ কিমি দিয়ার থেকে ছবি পাঠাচ্ছে চন্দ্রযান টু।
৭ সেপ্টেম্বর বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে নামিয়ে দেওয়ার আগে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় কক্ষপথ থেকে প্রথমে অবতরণ দক্ষিণ মেরু এলাকার ছবি তুলে খুঁটিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে নেবে অরবিটার; উঁচুনিচু জমি, বোল্ডার, খাদ ইত্যাদি বাদ দিয়ে নিরাপদ অবতরণস্থল চিহ্নিত করবে। তারপরই অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধীরে অতি ধীরে অবতরণ করবে বিক্রম ল্যান্ডার, প্রজ্ঞান রোভারকে সঙ্গে নিয়ে।
২০০৮ সালে পাঠানো চন্দ্রযান- ১ এখন চাঁদের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করছে, তবে তার ইসরোর সাথে বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চন্দ্রাভিযান বা মহাকাশ অভিযান পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে মানুষ পেয়েছে উন্নত ইন্টারনেট, জিপিএস ব্যবস্থা, রিমোট সেন্সিং, রিমোট কন্ট্রোল, বায়োমেট্রিক সেন্সর, উন্নত মানের কাচ, দীর্ঘস্থায়ী হালকা ব্যাটারি, অগ্নিনিরোধী পোশাক, রোবোটিক সার্জারি বা সাধারণ কম্পিউটার গেম খেলার জয়স্টিক, নতুন নতুন রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি।
চাঁদে জলের সন্ধান পাওয়া গেলে সেখানে তৈরী হবে বাসস্থান, হবে চাষাবাদ। তৈরী করা হবে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।