ফোন ছাড়া তো রাতেও ঘুম আসে না। আচ্ছা যদি এমনকিছু ঘটে যে একদিন ভোরে বালিশের পাশে ফোন হাতরাতে গিয়ে দেখলেন সেটি অদৃশ্য। ভাববেন বিছানা থেকে পড়ে গিয়েছে কিম্বা চুরিও যেতে পারে। তবে ফের ফোন কিনে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন, কিন্তু যদি দেখেন বাজারে আর ফোনের কোনও দোকানই নেই। আরে কোনও গাঁজাখুরি গপ্পের প্লট ফেঁদে বসিনি, এমনটাই ঘটতে চলেছে ২০৩৮ সালে। যখন বিকল হয়ে যাবে সমস্ত স্মার্টফোন, চেয়েও কিছু করার উপায় থাকবে না।
হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, ১৯ বছর পর এমন একটি দিন আসতে পারে যদি না ‘ইয়ার ২০৩৮ প্রবলেম’(Problem 2038)টি সমাধান করা যায়। আসলে কম্পিউটরের ক্যালেন্ডার শুরু হয়েছিল ১ জানুয়ারি ১৯৭০ সালে। কিন্তু ৩২-বিট প্রসেসর ২,১৪৭,৪৮৩,৬৪৭ পর্যন্ত গুণতে সক্ষম। তাই ২০৩৮ সালের ১৯ জানুয়ারি ইউনিভার্সাল টাইম ০৩:১৪:০৭ টায় ওই প্রসেসরটি নিজের সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে যাবে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, তখন কী হবে? সমস্ত কম্পিউটর ও মোবাইল(Mobile) কি বিকল হয়ে যাবে?
কী এই ২০৩৮-এর সমস্যা? উত্তর পেতে কয়েক বছর পিছনে হাঁটতে হবে। ২০০০ সালে অদ্ভুত এক সমস্যায় পড়েছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা। ১৯৫০-৬০ সালে যখন কম্পিউটার তৈরি হচ্ছিল, তখন বোর্ডে মেমোরি রিসোর্সের মাত্রা কম ছিল। তাই বছর উল্লেখ করার ক্ষেত্রে চার অঙ্কের পরিবর্তে দুটি অঙ্ক ব্যবহার শুরু করেন ইঞ্জিনিয়াররা। কিন্তু ২০০০ সালে পা রাখতেই মুশকিলে পড়তে হয়। কারণ ১ জানুয়ারি ২০০০ সাল ছোট করেলে কম্পিউটার দেখায় ‘০০’। ফলে বিষয়টি বোঝা বেশ জটিল হয়ে পড়ে। অনেকেই তা ১৯০০ সাল ভেবে বসেন। সেই সমস্যা মেটাতে আসে নয়া শব্দ। Y2K। অর্থাৎ ইয়ার ২০০০। সেবারের মতো সমাধান সূত্র বের হয়ে যায়। কিন্তু ২০৩৮ সালের সমস্যাটা একটু অন্যরকম। সমস্যাটা হবে ১৯ জানুয়ারি ২০৩৮ তারিখটি নিয়ে। গবেষকদের কথায়, ৩২-বিট প্রসেসর সমস্ত সিস্টেম বসিয়ে দিতে পারে।
তবে সামনে অনেকগুলি দিন পড়ে আছে। এরমধ্যে প্রযুক্তিগত উন্নতি এই পরিস্থিতিকে আমূল বদলে দিতে পারে। একটা সমাধান তো হাতেই রয়েছে, প্রসেসরের বিট বাড়িয়ে ৬৪ করেই দিলেই আপাতত মুক্তি মিলবে।