বার্মিংহ্যাম, ২ জুলাই: আজ, ICC World Cup 2019-এ মঙ্গলবার বার্মিংহ্যামে মুখোমুখি ভারত (India) vs. বাংলাদেশ (Bangladesh)। এই ম্যাচে জিতলে ভারত সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করবে আর হারলে বাংলাদেশের বিদায় নিশ্চিত হবে। সাম্প্রতিককালে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই নাটকীয় কিছু হয়ে তাকে। তা সে এশিয়া কাপের ফাইনালই হোক বা বিশ্বকাপে।
ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচে বিতর্কের কথা এলেই আসে মেলবোর্নে হওয়া ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের কথা। সেই কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত বড় ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারালেও পদ্মাপাড়ের দেশের অভিযোগ ছিল এমএস ধোনির নেতৃত্বে খেলা টিম ইন্ডিয়াকে অন্যায়ভাবে জেতাতে আম্পয়াররা হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের অভিযোগ ছিল, পেসার রুবেলের বলে ইয়ান গোল্ডের অদ্ভুত এক 'নো' বল ডাকা কিংবা শেখর ধাওয়ানের পাজামাটা বাউন্ডারি ছুঁয়ে দেয়ার পরেও রিয়াদকে আউট ঘোষণা করা- সবই ছিল সে ম্যাচে আলোচনার রসদ। যা নিয়ে দীর্ঘদিন বিতর্ক চলেছিল। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীরাও প্রকাশ্যে আইসিসি কর্তাদের একহাত নিয়ে দাবি করেছিলেন ভারতকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আসুন দেখে নেওয়া যায় সেই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের এমন পাঁচটা কথা যেটা এখনও অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর মনে তাজা--
১) একটি নো বল নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। ৯৯ রানে ব্যাট করছিলেন রোহিত শর্মা। বল হাতে বাংলাদেশী পেস বোলার রুবেল হুসেন। ফুলটস বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ২২ গজ ছাড়ছিলেন রোহিত। হঠাৎ আম্পায়ার আলিন দারের কল, নো বল। তারপর ২৭ বলে ৪৫ রানের রোহিত ঝড়ে বাংলাদেশের কাছে পাহাড় সমান রানের লক্ষ্য রাখে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯৩ রানে অল আউট হয়ে ১০৫ রানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। এই হার মেনে নিতে না পেরে কার্যত আম্পায়ারিংকেই দোষারোপ করে বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন মোর্তাজা। এমনকি আইসিসি প্রেসিডেন্ট মুস্তফা কামালও তেতে ওঠেন। শুরু হয় বাক যুদ্ধ। রুবেলের ফুলটস ডেলিভারি ঠিক কতটা উচ্চতা থেকে হিট করেছিলেন রোহিত? বলটি কি কোমরের ওপরে ছিল?
২) বাংলাদেশের মনে হয়েছিল রুবেলের ৪০ তম ওভারের চতুর্থ বলটি নো বল ছিল না, এবং রোহিত ৯৭ রানে আউট হতেন। সেই সময় রোহিতের সঙ্গে ক্রিজে ছিলেন সুরেশ রায়না। রায়না ৫৭ বলে ৬৫ রান করেন, রোহিত ১২৬ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের দাবি মেনে রোহিত শর্মা সেই সময় আউট হয়ে গেলেও ম্যাচের ফলের বিরাট ফারাক হত কি সনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
৩) সেই কোয়ার্টার ফাইনালে বিরাট কোহলি মাত্র ৩ রানে রুবেলের বলে আউট হয়েছিলেন। ধোনি করেছিলেন ৬ রান। রবীন্দ্র জাদেজা শেষের দিকে ১০ বলে ২৩ রানের ভাল ইনিংস খেলেছিলেন। তবে রোহিত-রায়নার চতুর্থ উইকেটে ১২২ রানের পার্টনারশিপটা ফারাক গড়ে দিয়েছিল।
৪) জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দাঁড়াতেই পারেনি। উমেশ যাদব, মহম্মদ শামি-র পেসের সামনে উড়ে যান সাকিবরা। বাংলাদেশ মাত্র ৪৫ ওভারে ১৯৩ রানে অল আউট হয়ে যায়। অধিনায়ক সাকিব করেন মাত্র ১০ রান। সর্বোচ্চ রান করেছিলেন নাসের হুসেন (৩৭)। উমেশ যাদব ৩১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। মহম্মদ শামি ও জাদেজা দুটি করে উইকেট নিয়েছিলেন।
৫) ফেসবুকে এই ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশে এত উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিল যে আইসিসি কর্তাদের কুশপুতুল দাহ হয়েছিল। আগামী দিনে বাংলাদেশ আর কোনও আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলবে না এমন দাবিও উঠেছিল। এমনো বলা হয়েছিল ম্যাচটিকে ফেরা খেলাতে হবে।