আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে গত কয়েক মরসুম ধরেই। কেকেআরের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এখনও পিঠের চোট সারিয়ে উঠতে না পারায় আদর্শ অধিনায়ক নিয়ে সবচেয়ে বেশী জল্পনা চলেছে। অধিনায়ক হিসেবে আন্দ্রে রাসেল, সাকিব আল হাসান, সুনীল নারিন এমনকি নবাগত শার্দূল ঠাকুরের নামও উঠে এলেও অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে নীতীশ রানাকে। যদিও নীতিশের অধিনায়কত্বের এটিই প্রথম আসর নয়। এর আগে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। রানার অধিনায়কত্বে ১২টি ম্যাচে ৮টি জয় পায় দল। চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত কেকেআর-এর হেড কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই অধিনায়কত্বের সিদ্ধান্তে যে তাঁর ভূমিকা রয়েছে সেটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কাগজে-কলমে কেকেআরের দলে অন্য আইপিএল দলের মতো খুব বেশী তারকা ক্রিকেটার নেয় যে কারণে বাকীদের তুলনায় দুর্বল দল বলে মনে হতে পারে। তবে দলে বিশেষ কিছু খেলোয়াড় রয়েছে যাদের উপর আশা করা যায় যে তারা যে কোনো মুহূর্তে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে এবং ২০২৩ আইপিএল শিরোপা আবার কলকাতার ঘরে ফিরতে পারে।
আইপিএল ২০২৩-এর জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্স দল - শ্রেয়স আইয়ার, নীতীশ রানা, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, শার্দুল ঠাকুর, লকি ফার্গুসন, উমেশ যাদব, টিম সাউদি, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী, অনুকূল রায়, রিঙ্কু সিং, নারায়ণ জগদীশন, বৈভব অরোরা, সুযশ শর্মা, ডেভিড ওয়েইস, কুলবন্ত খেজরোলিয়া, মনদীপ সিং, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান
ভেঙ্কটেশ আইয়ারের দুর্দান্ত পারফম্যান্সের জন্য আইপিএল থেকে সরাসরি ভারতীয় দলে এমনকি বিশ্বকাপের দলেও জায়গা পান। ওপেনার হিসেবে তাঁর সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। লিটন দাসকে গুরবাজের জায়গায় আরও ভাল বিকল্প তবে তিনি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলে যোগ দিতে পারবেন না।
তিন নম্বরে আশা অধিনায়ক রানা উঠে আসতে পারেন সেরা খেলোয়াড় হিসেবে। ২০১৮ সালে রানা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলার পর আর কোনও ব্যাটসম্যান তাঁর বেশি রান করতে পারেননি। কলকাতার এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে ইতিমধ্যেই ১,৭৪৪ রান তুলে ফেলেছেন তিনি। এছাড়া দলের প্রয়োজনে পার্টটাইম অফ স্পিন বোলিং দিয়েও অবদান রাখতে পারেন রানা।
শ্রেয়স অনিশ্চিত থাকায় রাসেল ৪ নম্বরে উঠতে পারেন। এর ফলে কলকাতার সবচেয়ে বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান কিছু সময় ক্রিজে থেকে অবস্থা অনুযায়ী খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন। টি-২০ ক্রিকেটের একজন ইউটিলিটি খেলোয়াড় হিসেবে ব্যাট বা বলে ম্যাচ জিততে পারেন রাসেল। ২০১৪ সালে কেকেআরের জার্সিতে অভিষেকের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৯১ ম্যাচে ৮৮ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১৯৭৭ রান করেছেন তিনি। তাঁর কেরিয়ারের স্ট্রাইক রেট ১৭৭.৮৮, যা টি-২০ ইতিহাসে যে কোনও খেলোয়াড়ের জন্য সেরা। কলকাতা গুরবাজ ও নারায়ণ জগদীশনকে উইকেটকিপার হিসেবে সহজেই খেলাতে পারে।
দিল্লি ক্যাপিটালস থেকে আসা শার্দূল ঠাকুরকে গতবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য বিবেচনা করা হয়নি। অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে শার্দুলকে জায়গা করে নিতে সাহায্য করতে পারে অলরাউন্ডার হিসেবে একটি দুর্দান্ত আইপিএল মরসুম। বল হাতে নারাইন কেকেআরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। ২০১২ সালে আইপিএলে অভিষেকের পর থেকেই নারিন আইপিএলের অন্যতম স্পিনার। ১৪৮ ম্যাচে ১৫২ উইকেট নিয়ে আইপিএলের ইতিহাসে অষ্টম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি নারাইন।
রিঙ্কু সিং অবশ্যই কেকেআরের জন্য অন্যতম ইতিবাচক খেলোয়াড় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন, এই মরসুমেও একই রকম পারফরম্যান্সের আশা করবে ফ্র্যাঞ্চাইজি। লকি ফার্গুসনকে ব্যাক-আপ করে পেস আক্রমণ সামলাতে পারেন টিম সাউদি ও উমেশ যাদব।