দিল্লি ক্যাপিটালস আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025)এর চতুর্থ ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টদের বিরুদ্ধে একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচে এক উইকেটে জিতেছে এবং এই জয়ের সাথে তারা অনেক আকর্ষণীয় রেকর্ডও তৈরি করেছে।লখনউয়ের বিশাখাপত্তনমে খেলা এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে লখনউ ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২০৯ রান করে। এরপর দিল্লি ২১০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তিন বল বাকি থাকতে এক উইকেটে সফলভাবে পূরণ করে।দিল্লির এই জয়ের নায়ক ছিলেন আশুতোষ শর্মা, যিনি সাত নম্বরে ব্যাট করে মাত্র ৩১ বলে ৬৬ রান করেন এবং দলকে এই ঐতিহাসিক জয়ে নিয়ে যান। এই ইনিংসে, তিনি পাঁচটি চার এবং পাঁচটি ছক্কা মেরেছিলেন এবং তার বিস্ফোরক ইনিংসের ভিত্তিতে তিনি দিল্লিকে একটি দুর্দান্ত জয় এনে দেন। এটি ছিল আইপিএলের ইতিহাসে দিল্লি ক্যাপিটালসের দ্বারা তাড়া করা সর্বোচ্চ লক্ষ্য। ২১০ রানের টার্গেট এখন পর্যন্ত আইপিএলে দিল্লির সফলভাবে তাড়া করা সর্বোচ্চ স্কোর হয়ে উঠেছে। এই প্রথম কোনো দল লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ২০০ রানের লক্ষ্য অর্জন করেছিল।এছাড়াও, এটিও ছিল আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ম্যাচ যা দিল্লি ক্যাপিটালস এক উইকেটে জিতেছে, যা এই জয়টিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।

এই ম্যাচটি দিল্লির জন্য খুব কঠিন ছিল, কারণ এক সময় দলটি ৯০ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়েছিল। কিন্তু তারপরে আশুতোষ শর্মা একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন এবং বিপ্রজ নিগমের সঙ্গে ম্যাচটিকে উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলেন। বিপ্রজও ১৫ বলে ৩৯ রান করেন, যা দিল্লির জয়ের আশা জাগিয়েছিল।শেষ ওভারে ছক্কা মেরে দলকে লক্ষ্যে নিয়ে যান আশুতোষ। এই ইনিংসের জন্য তিনি ম্যাচ সেরার খেতাবও পান।

আশুতোষ শর্মার ৬৬ রানের ইনিংস শুধু দিল্লির জয়ের পথই খুলে দেয়নি আইপিএলের ইতিহাসে একটি নতুন রেকর্ডও গড়েছে। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে সাত নম্বরে বা নীচে ব্যাট করার সময় তিনি সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠেন।এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল অক্ষর প্যাটেল ও ক্রিস মরিসের নামে। অক্ষর প্যাটেল ২০২৩ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৫৪ রান করেছিলেন, যেখানে ক্রিস মরিস ২০১৭ সালে একই দলের বিরুদ্ধে ৫২ রান করেছিলেন। কিন্তু ২০২৫ এর মরসুমে আশুতোষ শর্মা তার ইনিংস দিয়ে তাদের দুজনকেই পিছনে ফেলে দিয়ে দিল্লির হয়ে একটি নতুন রেকর্ড গড়েন।

আশুতোষ শর্মার ইনিংস শুধু দিল্লির জন্য নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের জন্যও বিশেষ ছিল। আইপিএলে সাত নম্বরে বা তার নিচে ব্যাটিং করে ভারতীয়দের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড এখন তার দখলে। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল ইউসুফ পাঠানের নামে।যিনি ২০০৯ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে ৬২ রান করেছিলেন। উপরন্তু, আশুতোষ শর্মার ৬৬ রানের ইনিংসটি এখন আইপিএলে সফল রান তাড়ার সময় সপ্তম বা নিম্ন ক্রমে ব্যাটিং করা সর্বোচ্চ ইনিংসে পরিণত হয়েছে।

এই ম্যাচে একের পর এক রেকর্ড গড়ে দিল্লি ক্যাপিটালস। এই প্রথম দিল্লি পাঁচ উইকেটের পতনের পর ১০০ রানের বেশি করে ম্যাচ জিতেছিল। এর মাধ্যমে দিল্লি আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ১০ রানের মধ্যে তৃতীয় উইকেট হারানো সত্ত্বেও ২০০ রানের বেশি লক্ষ্য অর্জন করে। এর আগে, লখনউ সুপার জায়ান্টস ২০২৩ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরু (RCB)-এর বিরুদ্ধে ১৯০ রান করেছিল। ১৬১ রানে চতুর্থ উইকেট এবং ১৪৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পরেও দিল্লি ম্যাচ জিততে সফল হয়, যা একটি বড় রেকর্ড।

দিল্লির এই ঐতিহাসিক জয় আইপিএলের ইতিহাসে আরও একটি আকর্ষণীয় অর্জন যোগ করেছে,যখন দিল্লি এক উইকেটে ২০০ এর উপরে লক্ষ্য অর্জন করে। এই দ্বিতীয়বার আইপিএলে ২০০-এর উপরে লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে একটি দল এক উইকেটে জিতেছে। এর আগে, ২০২৩ সালে, লখনউ আরসিবির বিরুদ্ধে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিল।