প্রতি বছর ২৪ মে গোটা দুনিয়ায় পালন করা হয় বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া দিবস। সিজোফ্রেনিয়া হল একটি গুরুতর মানসিক রোগ। সিজোফ্রেনিয়ার রোগী হ্যালুসিনেশন এবং ভীতিকর ছায়া দেখতে পায়। নারী, পুরুষ বা যেকোনও বয়সের মানুষই শিকার হতে পারেন এই মানসিক রোগের। এই রোগে ভুক্তভোগীরা তাদের নিজস্ব জগতে মগ্ন থাকে এবং মানুষ ও কোলাহল জগৎ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। সাধারণত কম বয়স থেকেই এর উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়, যেমন পড়াশোনায় আগ্রহ না থাকা, সব সময় বিরক্তি, ঘুমের সমস্যা, নির্জন পরিবেশে থাকা, হাসতে বা কাঁদতে না পারা। এমতাবস্থায় রোগীদের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া দিবস।

মানুষের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক একটি নিউরোট্রান্সমিটার আছে, যা মস্তিষ্ক ও শরীরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করার কাজ করে। যখন কোনও ডোপামিনের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন তাকে বলে সিজোফ্রেনিয়া। এটি এমন একটি গুরুতর মানসিক রোগ, যার কারণে অনেকে সারা জীবন নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে কাটায়। সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তার কল্পনাকে বাস্তব বলে মনে করে এবং বিভ্রান্তির মধ্যে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে, সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছে বিশ্বের জনসংখ্যার আনুমানিক ১ শতাংশ, ভারতে এই রোগের শিকার হয়েছেন প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়াও কারণে বেড়ে যেতে পারে সিজোফ্রেনিয়ার ঝুঁকি। প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি ব্যাহত করতে পারে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা। অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেমন খারাপ খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়ামের অভাব এবং অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণেও বৃদ্ধি পায় সিজোফ্রেনিয়ার মতো বিভিন্ন মানসিক রোগের ঝুঁকি। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, সিজোফ্রেনিয়ায় জিনগত কারণেও হতে পারে। বিশ্ব সিজোফ্রেনিয়া দিবস উপলক্ষে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি সুষম খাদ্য, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ ও পর্যাপ্ত ঘুমের বিষয়ে সচেতন হওয়া শুরু করা উচিত সকলের।