করোনা (Covid Era) চলে গেলেও তাঁর প্রভাব এখনো গোটা বিশ্বে যে বিদ্যমান। সম্প্রতি তাঁর পর্যবেক্ষণ সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ধীরে ধীরে শিশুদের মধ্যে করোনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করেছে। মহামারী চলাকালীন জন্ম নেওয়া শিশুরা (Corona Period Children) তাই এখন স্কুলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষাবিদরা স্পষ্টভাবে এই ঘটনাগুলির মধ্যে শিক্ষার্থীদের উপর মহামারীর সময়ে তৈরি হওয়া মানসিক চাপ এবং স্কুল থেকে তাঁদের বিচ্ছিন্ন থাকার প্রভাব দেখছেন।
শিক্ষার্থীদের কথা বলার সমস্যাঃ-
সম্প্রতি দেখা গেছে অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা অনেক কষ্টে কথা বলতে পারছে না।অনেক ছাত্র আছে যারা পুরো ক্লাসের সময় চুপচাপ বসে থাকছে যেন তারা কিছু হারিয়ে ফেলেছে এবং অনেকে আছে যারা পেন্সিলটাও ঠিক ভাবে ধরতে পারছে না। কিছু শিক্ষার্থী আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। তারা অকারণে একে অপরকে চেয়ার ছুড়ছে এবং কামড়াচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ডের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড.জেইম পিটারসন বলেছেন যে অবশ্যই মহামারী চলাকালীন জন্ম নেওয়া শিশুরা আগের তুলনায় উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এছাড়াও, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে মহামারীর প্রভাব অনেক ছোট বাচ্চার প্রাথমিক বিকাশকে প্রভাবিত করেছে।
কী কী কারনে প্রভাবিত হয়েছে শিশুরাঃ-
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে মহামারী শুরু হওয়ার সময় শিশুরা শারীরিক ভাবে স্কুলে ছিল না। এই বয়সের শিশুদের প্রাথমিক বছরগুলি অর্থাৎ ১-৫ বছর বয়স তাদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মহামারীর সময় বদ্ধ বাড়িতে থাকা বা গৃহবন্দী হয়ে থাকার মত কারণ ছোট বাচ্চাদের প্রভাবিত করেছে। যেমন পিতামাতার চাপ, মানুষের সঙ্গে কম যোগাযোগ, বিদ্যালয়ে কম উপস্থিতি, মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভির স্ক্রিনে বেশি সময় দেওয়া এবং শারীরিক ভাবে খেলায় কম সময় এগুলো প্রভাবিত করেছে শিশুর হ্ররদয় ও মস্তিষ্ক।
অনেক ছাত্রই কথা বলতে পারছে নাঃ-
সেন্ট পিটার্সবার্গ (ফ্লোরিডা) থেকে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ডেভিড ফেল্ডম্যান (Kindergarten teacher David Feldman) রিপোর্ট করেছেন যে অনেক ৪ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা অকারণে একে অপরকে চেয়ার ছুঁড়ে মারছে, কামড়াচ্ছে এবং আঘাত করছে। অপর এক শিক্ষক টমি শেরিডান(Tommy Sheridan) ১১ বছর ধরে কিন্ডারগার্টেনে পড়াচ্ছেন। তিনি বলেন- অনেক শিক্ষার্থী ঠিক ভাবে কথা বলতে পারছে না। অনেকেই টয়লেটে যেতে পারে না এমনকি পেন্সিল ধরতেও অনেকের কষ্ট হচ্ছিল। ফ্রেডরিক (Fredrick) একজন প্রি-প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক বলেন যে এই বছরের যে সমস্ত শিশুরা স্কুলে এসেছে তাঁরা মহামারীর আগে দক্ষ থাকা শিক্ষার্থীদের মত নয়।
শিশুদের দক্ষতা তাদের বয়স অনুযায়ী বিকশিত হয়নিঃ-
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মহামারী চলাকালীন জন্ম নেওয়া নবজাতক শিশুরা এখন সকলেই প্রাক-স্কুল বয়সের। তাদের উপর মহামারীর প্রভাব স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। তাদের অনেকেই একাডেমিক বিষয়গুলো ধরতে পারছেন না। এছাড়া তাদের বিকাশও হয়েছে ধীরগতিতে। একাধিক শিক্ষক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নবজাতক বিশেষজ্ঞদের সাথে সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে এই অবস্থানটির কথা বলা হয়েছে। সেই পর্যবেক্ষণে কোভিড পরবর্তী একটি নতুন প্রজন্মকে দেখানো হয়েছে যাদের দক্ষতা তাদের বয়স অনুযায়ী বিকশিত হয়নি। শিশুরা তাদের প্রয়োজনের সাথে যোগাযোগ করতে, আকার এবং অক্ষর চিনতে, তাদের আবেগ প্রদর্শন করতে বা সমবয়সীদের সাথে তাদের সমস্যাগুলি সমাধান করতে সক্ষম হচ্ছেনা।