Pitru Paksha 2025: চন্দ্র গ্রহণের (Chandra Hrahan 2025) দিনই শুরু হয়েছে পিতৃ পক্ষ (Pitru Paksha)। দেবী পক্ষ শুরুর আগে অনেকে এই পক্ষকে শ্রাদ্ধ পূর্ণিমাও বলেন। পিতৃ পক্ষে পূর্বপুরুষকে স্মরণ করা হয়। তর্পণের রীতি রয়েছে। তাই পিতৃ পক্ষ শুরু হতেই গঙ্গা বা বিভিন্ন জলাশয়ের ঘাটে দেখা যায় বহু মানুষকে। তর্পণ করে পিতৃ পুরুষকে স্মরণর নামই পিতৃ পক্ষ।
এই পিতৃপক্ষে রাহুল কেতু দোষ (Rahu-Ketu Dosh) কাটাতেও অনেকে বিভিন্ন ধরনের পুজোআচ্চা করে থাকেন। ৭ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে পিতৃ পক্ষের দিনক্ষণ। এই সময়েই রাহু, কেতু দোষ কাটাতে হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন পুজোআচ্চার নিয়ম রয়েছে। পিতৃ পুরুষকে জল, খাবার এবং প্রার্থনা দিয়ে আশীর্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করেন মানুষ। তাইতো পিতৃ পক্ষে নিয়ম মেনে মানুষ নানাবিধ ধর্মীয় আচার পালন করেন।
শাস্ত্র মতে, রাহু, কেতু যদি আপনার হাতের রেখায় বসে থাকে, তাহলে পিতৃ পক্ষে এই দোষ কাটাতে হয়। রাহু, কেতু দোষ কাটাতে পূর্ব পুরুষকে নৈবেদ্য নিবেদন করতে হয় এই পিতৃ পক্ষে। এমন মনে করা হয়। পাশাপাশি রাহু, কেতু দোষ থাকলে পরিবারে ঝগড়া, বিবাদ, অশান্তি শুরু হয়। আর্থিক অনটনের মুখেও পড়তে হয় মানুষকে। তাইতো পিতৃপক্ষের সময় কাটাতে হয় মানুষকে এই রাহু, কেতু দোষ।
পিতৃপক্ষে জল, কালো তিল দানের রীতি
পিতৃপক্ষে জল এবং কালো তিল দান করার রীতি রয়েছে। রাহু, কেতু দোষ কাটাতে এই জল এবং কালো তিল দিয়ে পির্তৃ পুরুষকে নৈবেদ্য চড়ানোর কথা বলা হয়। অর্থাৎ যাকে বলে তর্পণ (Tarpan)। গঙ্গা বা জলাশয়ে কালো দিন দান করে তর্পণ করা হয় পিতৃ পুরুষের উদ্দেশে।
যদি কেউ বাড়ি থেকে দূরে থাকেন, তাহলে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কিংবা কোনও গাছের নীচে দাঁড়িয়ে এই তর্পণ রীতি পালন করতে পারেন আপনি।
পিণ্ডদান করুন চাল এবং ঘি দিয়ে
চাল, কালো তিল, ঘি দিয়ে তৈরি পিণ্ডদান করুন পিতৃ পুরুষের উদ্দেশে। এর জন্য আপনাকে নদীর পাড়ে যেতে হবে না। বাড়িতেই চাল, ঘি এবং কালো তিল দিয়ে মণ্ড তৈরি করে পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন থালায় রেখে পিতৃ পুরুষকে নিবেদন করুন। সেই সঙ্গে করুন প্রার্থনা। আপনি যে নৈবেদ্য দান করেছেন, তা যদি পাখি, কীটপতঙ্গ খায়, তাহলে আপনার পূর্ব পুরুষ তা গ্রহণ করেথেন বলে ধারণা করা হয়।
গরু, কুকুর পাখিকে খাওয়ানোর রীতি
পির্তৃ পক্ষে রাহু, কেতু দোষ কাটাতে কুকুর, গরু এবং পাখিকে খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। মনে করা হয়, পশু, পাখির রূপে হাজির হয়ে আপনার পূর্ব পুরুষ ওই নৈবেদ্য গ্রহণ করেন।
গরু যদি আপনার কাছাকাছি এলাকায় না থাকে, তাহলে রাস্তার পশুকে খাওয়ান। গরু, কুকুর, পাখিকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্য, পিতৃপুরুষকে আপনি তুষ্ট করছেন। আর এর মাধ্যমেই রাহু, কেতু দোষ কাটে বলে মনে করা হয়।
দান করার রীতি রয়েছে এই পিতৃপক্ষে। এই সময় পূর্ব পুরুষকে তুষ্ট করতে খাবার, পোশাক, আপনার সাধ্যমত দান করুন। এতে রাহু, কেতু দোষ কাটে বলে শাস্ত্রে কথিত রয়েছে।
প্যাকেটে খাবার ভরে মানুষকে দান করুন (যাঁদের অভাব রয়েছে)। এতেও রাহু, কেতু দোষ কাটে বলে মনে করা হয়।
আলো জ্বালানোর রীতি
পির্তৃ পুরুষকে তুষ্ট করতে এই পক্ষে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান। নিয়ম করে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালান। বাড়ির দক্ষিণ দিক অনুসরণ করে পির্তৃপক্ষে ঘিয়ের প্রদীর জ্বালানো শুরু করুন। পূর্ব পুরুষ শান্ত হলে, রাহু, কেতু দোষ কেটে যায় বলে মনে করা হয়।
পির্তৃপক্ষে মন্ত্রোচ্চারণ করুন
এই পির্তৃপক্ষে নিষ্ঠাভরে মন্ত্র জপ করুন।
ওম পত্রায়ু নম
ওম কেম কেতু নম
ওম রাম রাহাভে নম
এই মন্ত্রগুলি উচ্চারণ করে পির্তৃপুরুষকে স্মরণ করুন এবং রাহুল কেতু দোষ কাটান।
সহজপাচ্য খাবার খান
পির্তৃপক্ষে সাত্ত্বিক খাবার খাওয়ার নিয়ম অনেকে মেনে চলেন। তর্পণের দিন যেমন নিরামিষ আহর অনেকে গ্রহণ করেন, তেমনি গোটা পক্ষ জুড়ে ডাল, ভাত, সবজি, দুধ এবং ফলমূল খেয়ে অনেকে রাহুস কেতু দোষ কাটানোর চেষ্টা করেন।