প্রতি বছর ৪ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বিষয় সচেতনতা ও সহায়তা দিবস পালিত হয়। এটি মূলত যুদ্ধ ও সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত বিস্ফোরক মাইন ও অবিস্ফোরিত অস্ত্রের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালন করা হয়। এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী মাইন-প্রভাবিত এলাকাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা প্রদান করা।
বিশ্বজুড়ে অনেক দেশ এখনো যুদ্ধ ও সংঘাতের ফলে মাইন ও বিস্ফোরক অস্ত্র দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। যুদ্ধ শেষ হওয়ার বহু বছর পরও এই মাইনগুলো সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। বিশেষ করে শিশু ও কৃষকদের জন্য এটি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে, কারণ তারা প্রায়ই না জেনে মাইন-সংকুল এলাকায় প্রবেশ করে। জাতিসংঘের Mine Action Service (UNMAS), বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, সরকার ও এনজিও মিলিতভাবে মাইন অপসারণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
২০০৫ সালে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিবসটি ঘোষণা করে। এর পর থেকে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে মাইন আক্রান্ত দেশগুলোর সমস্যা তুলে ধরা হয়। প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়, যা বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের ওপর আলোকপাত করে। এই দিবসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মাইন অপসারণে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে।
সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, মাইন অপসারণের জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞদের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা উন্নত ডিটেকশন প্রযুক্তি ও রোবটিক্স ব্যবহার করে মাইন খুঁজে বের করছে এবং ধ্বংস করছে। এ ছাড়া, যারা মাইনের কারণে আহত হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধারেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মোটকথা, আন্তর্জাতিক খনি বিষয় সচেতনতা ও সহায়তা দিবস শুধুমাত্র একটি দিবস নয়, বরং এটি মাইনমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য একটি আন্দোলন। এই সচেতনতা প্রচার কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষকে নিরাপদ করা, মানবাধিকার রক্ষা করা এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা সম্ভব।