স্কুলে গিয়ে পিছনের বেঞ্চে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে খুদে পড়ুয়া, তার কথা ভুলে গিয়েই ক্লাস টিচার বাড়ি চলে গিয়েছেন। এমন ঘটনা শুধু সেলুলয়েডে নয় বাস্তবেও অনেক সময় ঘটে। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা বিমানে উঠে ঘুমিয়ে পড়লেন সবাই তাঁকে রেখে চলে গেল, এমনটা বোধহয় কেউ শোনেনি। তবে এবার শুনবেন, কেননা এয়ারা কানাডার বিমানে এই ঘটনাই ঘটেছে। চলতি মাসেই এয়ার কানাডার বিমানে চড়ে টরন্টো (Toronto) যাচ্ছিলেন টিফানি অ্যাডামস (Tiffani Adams) নামের এক মহিলা। বিমান টেকঅফ করতে না করতেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। আরও পড়ুন-খরা কাটাতে জীবনকেই বাজি রাখলেন, ২০হাজার মহিলার প্রচেষ্টায় জলে ভরল এই নদী
যখন টিফানির ঘুম ভাঙে, দেখেন ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে শুয়ে আছেন, কেউ কোত্থাও নেই। বেশ খানিক্ষণ পর ধাতস্থ হয়ে বুঝতে পারেন বিমান ল্যান্ড করেছে, তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে ছিলেন। সবাই যেযার মতো নেমে গন্তব্যে চলে গিয়েছে। এমনকী বিমানের ক্রু মেম্বাররাও তাঁকে দেখেননি, বা খোঁজ করেনি। প্রথমটায় বেজায় ঘাবড়ে গেলেও ধীরে ধীরে খেয়াল করেন নিঃশ্বাস নিতে পারছেন কি না। তবে দেখতে কিছুই পাচ্ছিলেন না, হাতড়ে হাতড়ে মোবাইল পেলেও সেটিতে চার্জ ফুরিয়েছে। প্লাগ পয়েন্ট খোঁজার চেষ্টা করতে গিয়ে বার দুই হোঁচটও খান তিনি, তারপর অনেক কষ্টে ককপিটে পৌঁছে একটা টর্চ খুঁজে পান টিফানি অযাডাম্স। ততক্ষণে অনেকটা সময় গড়িয়েছে। মৃত্যুভয় তাঁকে একটু একটু করে গ্রাস করছে। কোনওকর্মে সাহসে ভর করে বিমানের দরজার দিকে এগিয়ে যান তিনি, সেখানে আর এক বিপদ। দরজা খুলতেই দেখলেন অনেকটা নিচে ঝাঁপাতে গেলে হাত পা ভাঙার সম্ভাবনা প্রবল। তায় দরজা টেনে খুলে রাখতে পারছেন না, মৃত্যু অবধারিত বুঝতে পেরে মুষড়ে পড়েন তিনি। আমচমকাই দেখেন রানওয়েতে লাগেজ ভ্যান নিয়ে যাচ্ছেন এক কর্মী। চেঁচিয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। এবার হাতে থাকা টর্চের কথা মনে পড়তেই সেটি ওই কর্মীর লাগেজ ভ্যানের সোজাসুজি আলো ফেলেন। একই সঙ্গে সাহায্যের জন্য চেঁচাতে শুরু করেন। এরপর এই লাগেজ কর্মীর সহায়তায় অন্ধাকার থেকে মুক্তি মেলে।
বিষয়টি জানা জানি হতেই মুখ পুড়েছে এয়ার কানাডার (Air Canada)। কর্মীরা কী করে এক যাত্রীকে ফেলে বিমান থেকে বেরিয়ে গেল তানিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি বিমান থেকে যাত্রীরা সবাই নামলেন কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয় না? আর ওই মহিলাই বা কীকরে এতটা সময় ঘুমিয়ে রইলেন (Adams fell asleep on her short flight), ইতিমধ্যেই তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থা। ঘটনার পর বেশ কয়েকটা দিন কেটে গেলেও টিফানি এখনও ট্রমার মধ্যেই রয়েছেন। দুচোখের পাতা এক করতে পারছেন না, মনে হচ্ছে ঘুম থেকে উঠলেই দেখবেন অন্ধকার বন্দি হয়ে আছেন।