Masturbation Myth vs Facts: মানুষের যৌনতার একটি স্বাভাবিক ও সাধারণ দিক হলো হস্তমৈথুন। হস্তমৈথুন বা স্ব-উত্তেজনা হলো মানুষের যৌন আচরণের একটি স্বাভাবিক ও সাধারণ অংশ। এটি শুধুমাত্র শারীরিক প্রয়োজন মেটায় না, বরং মানসিক চাপ হ্রাস, ভাল ঘুম এবং নিজের যৌন সচেতনতা বাড়াতেও সাহায্য করে। যদিও সমাজে এখনও এই বিষয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণা আছে, স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিকোণ থেকে হস্তমৈথুনকে স্বাভাবিক ও নিরাপদ হিসেবে দেখা যায়। হস্তমৈথুন নিয়ে মিথ অনেক। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে তেমন ধারনা করতে পারেন না। আজ এই প্রতিবেদনে থাকল-পুরুষ এবং মহিলাদের হস্তমৈথুনের পার্থক্য। পুরুষ এবং মহিলাদের অভিজ্ঞতা, শারীরিক প্রতিক্রিয়া এবং সামাজিক ধারণা অনেক ক্ষেত্রে আলাদা হতে পারে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নিচে সংক্ষেপে মূল পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হল--
১. শারীরিক পার্থক্য
পুরুষদের ক্ষেত্রে: সাধারণত লিঙ্গের উত্তেজনা কেন্দ্রীভূত হয়, বিশেষ করে গ্ল্যান্স বা শ্যাফটে। সেক্সুয়াল ক্লাইম্যাক্স বা উচ্ছ্বাস প্রায়শই স্পার্ম নির্গমনের মাধ্যমে ঘটে, যার পর একটি ‘রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ড’ শুরু হয়, যেখানে পুনরায় উত্তেজনা সাময়িকভাবে সীমিত থাকে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে: সাধারণত ক্লিটোরিস, ভলভা বা যোনি অঞ্চলে কেন্দ্রিত থাকে। বিভিন্ন উত্তেজনার কৌশল ব্যবহার করা যায়, যেমন ঘষা বা টয়। মহিলারা স্পার্ম নির্গমন ছাড়াই অর্গাজম উপভোগ করতে পারেন এবং রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ড না থাকায় একাধিক অর্গাজমও সম্ভব।
২. অর্গাজমের ধরণ ও ফ্রিকোয়েন্সি
পুরুষরা সাধারণত একবারের মধ্যে একটি অর্গাজম অনুভব করেন, যা রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ডের কারণে মিনিট থেকে ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
মহিলারা একাধিক অর্গাজমের সক্ষম, কারণ তাদের রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ড নেই, তবে এটি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
৩. কৌশল ও পছন্দ
পুরুষ: লিঙ্গকে স্ট্রোক বা গ্রিপ করার কৌশল সাধারণ। লুব্রিকেশন ব্যবহার করা হয়। কখনও কখনও পর্নোগ্রাফি বা টয়ও ব্যবহার করা হয়।
মহিলা: ক্লিটোরিস উত্তেজনা, যোনি প্রবেশ বা উভয়ের সংমিশ্রণ কৌশল হতে পারে। ভাইব্রেটর, ডিল্ডো বা হাতের ব্যবহার করা সাধারণ বিষয়।
৪. হরমোন ও মানসিক প্রভাব
উভয় লিঙ্গেই অর্গাজমের সময় এন্ডরফিন, ডোপামিন এবং অক্সিটোসিন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তবে মহিলারা কখনও কখনও বেশি মানসিক সংযোগ অনুভব করেন। পুরুষরা সাধারণত শারীরিকভাবে দ্রুত সন্তুষ্ট হন।
৫. ফ্রিকোয়েন্সি এবং সামাজিক মান
কিনসেই ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষরা সাধারণত মহিলাদের তুলনায় বেশি ঘনঘন হস্তমৈথুন করেন। সমাজে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি নিয়ে অবহেলাজনিত দৃষ্টিভঙ্গি বেশি থাকায় কম রিপোর্ট বা কম ফ্রিকোয়েন্সি দেখা যায়।
৬. স্বাস্থ্য উপকারিতা
পুরুষদের জন্য: নিয়মিত হস্তমৈথুন প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে, ঘুম উন্নত করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মহিলাদের জন্য: এটি পেলভিক ফ্লোরের পেশি শক্তিশালী করতে, মাসিকের যন্ত্রণা কমাতে এবং যৌন সচেতনতা বাড়াতে সাহায্।
৭. সম্ভাব্য ঝুঁকি
সঠিকভাবে করা হলে ঝুঁকি কম। পুরুষদের অতিরিক্ত হস্তমৈথুন সাময়িক অসংবেদনশীলতা বা জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। মহিলাদের অতিরিক্ত ঘষায় বা ভুল টয় ব্যবহারে অস্বস্তি হতে পারে।
পুরুষরা ভিজ্যুয়াল উদ্দীপনা বেশি ব্যবহার করেন, মহিলারা কখনও কখনও কণ্ঠ বা স্বর, মানসিক কল্পনা ব্যবহার করেন।
৯. সাংস্কৃতিক ও মানসিক কারণ
সমাজে মহিলাদের হস্তমৈথুন নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা কম, যা অপরাধবোধ বা লজ্জা সৃষ্টি করতে পারে। পুরুষরা তুলনামূলকভাবে কম সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির সম্মুখীন হন।
১০. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সচেতনতা
উভয় লিঙ্গের জন্য হস্তমৈথুন নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা মিথ দূরীকরণ ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ।
হস্তমৈথুন পুরুষ ও মহিলাদের জন্য স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর। পার্থক্যগুলো মূলত শারীরবিজ্ঞান, মানসিকতা ও সামাজিক ধারা থেকে উদ্ভূত। সঠিক হাইজিন এবং মডারেশনের মাধ্যমে এটি নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা যায়।
( ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরামর্শের জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)