(Photo Credits: wikimedia commons)

উমা ফিরেছেন কৈলাসে (Kailash)। মিটেছে বিসর্জন পর্ব (Visarjan)। এবার বাংলা মেতে উঠতে প্রস্তুত ধন দেবীর আরাধনায়। আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীর (Kojagari Laxmi) আরাধনা হয় বাংলার বাড়িতে বাড়িতে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, লক্ষ্মী হলেন ধন সম্পত্তির দেবী। ধন সম্পদের আসা এবং মঙ্গল কামনাতেই বাড়িতে বাড়িতে লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। সারা বছরই লক্ষ্মীর আরাধনা হয় বাঙালি গৃহস্থ বাড়িতে। বিশেষত বৃহস্পতিবার। এছাড়াও পৌষ সংক্রান্তিতেও বাড়ি তে হয় লক্ষ্মীপুজো। লক্ষ্মী পুজোর প্রাথমিক শর্তই হল পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা। বাড়ি ঘর পরিস্কার করে সুন্দর করে সাজিয়ে পুজো করাই মূলত লক্ষ্মীর আরাধনা। এছাড়া এ কথা প্রায় সকলের ই জানা যে পাঁচালি দ্বারা লক্ষী দেবীর আরাধনা করলে দেবী তুষ্ট হন। তাই লক্ষী পুজোর আগেই একবার চোখ বুলিয়ে নিন পাঁচালিতে।

দোলপূর্ণিমা নিশীথে নির্মল আকাশ

মন্দ মন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস

লক্ষ্মীদেবী বামে করি বসি নারায়ণ

কহিতেছে নানা কথা সুখে আলাপন।।

আরও পড়ুন: Laxmi Puja 2019: অগ্নিমূল্য লক্ষ্মী পুজোর বাজার; কেনাকাটায় কাটছাঁট মধ্যবিত্ত বাঙালির

হেনকালে বীণাযন্ত্রে হরি গুণগান

উপনীত হইলেন নারদ ধীমান

ধীরে ধীরে উভপদে করিয়া প্রণতি

অতঃপর কহিলেন লক্ষ্মীদেবী প্রতি।।

শুন গো, মা নারায়ণি, চলো মর্ত্যপুরে

তব আচরণে দুখ পাইনু অন্তরে

তব কৃপা বঞ্চিত হইয়া নরনারী

ভুঞ্জিছে দুর্গতি কত বর্ণিবারে নারি।।

সতত কুকর্মে রত রহিয়া তাহারা

দুর্ভিক্ষ অকালমৃত্যু রোগে শোকে সারা

অন্নাভাবে শীর্ণকায় রোগে মৃতপ্রায়

আত্মহত্যা কেহ বা করিছে ঠেকে দায়।।

কেহ কেহ প্রাণাধিক পুত্রকন্যা সবে

বেচে খায় হায় হায় অন্নের অভাবে

অন্নপূর্ণা অন্নরূপা ত্রিলোকজননী

বল দেবি, তবু কেন হাহাকার শুনি।।

কেন লোকে লক্ষ্মীহীন সম্পদ অভাবে

কেন লোকে লক্ষ্মীছাড়া কুকর্ম প্রভাবে

শুনিয়া নারদবাক্য লক্ষ্মী ঠাকুরানি

সঘনে নিঃশ্বাস ত্যজি কহে মৃদুবাণী।।

সত্য বাছা, ইহা বড় দুঃখের বিষয়

কারণ ইহার যাহা শোনো সমুদয়

আমি লক্ষ্মী কারো তরে নাহি করি রোষ

মর্ত্যবাসী কষ্ট পায় ভুঞ্জি কর্মদোষ।।

মজাইলে অনাচারে সমস্ত সংসার

কেমনে থাকিব আমি বল নির্বিকার

কামক্রোধ লোভ মোহ মদ অহংকার

আলস্য কলহ মিথ্যা ঘিরিছে সংসার।।

তাহাতে হইয়া আমি ঘোর জ্বালাতন

হয়েছি চঞ্চলা তাই ওহে বাছাধন

পরিপূর্ণ হিংসা দ্বেষ তাদের হৃদয়

পরশ্রী হেরিয়া চিত্ত কলুষিত ময়।।

রসনার তৃপ্তি হেতু অখাদ্য ভক্ষণ

ফল তার হের ঋষি অকাল মরণ

ঘরে ঘরে চলিয়াছে এই অবিচার

অচলা হইয়া রব কোন সে প্রকার।।

এসব ছাড়িয়া যেবা করে সদাচার

তার গৃহে চিরদিন বসতি আমার

এত শুনি ঋষিবর বলে, নারায়ণি

অনাথের মাতা তুমি বিঘ্নবিনাশিনী।।

কিবা ভাবে পাবে সবে তোমা পদছায়া

তুমি না রাখিলে ভক্তে কে করিবে দয়া

বিষ্ণুপ্রিয়া পদ্মাসনা ত্রিতাপহারিণী

চঞ্চলা অচলা হও পাপনিবারণী।।

তোমার পদেতে মা মোর এ মিনতি

দুখ নাশিবার তব আছে গো শকতি

কহ দেবি দয়া করে ইহার বিধান

দুর্গতি হেরিয়া সব কাঁদে মোর প্রাণ।।

দেবর্ষির বাক্য শুনি কমলা উতলা

তাহারে আশ্বাস দানে বিদায় করিলা

জীবের দুঃখ হেরি কাঁদে মাতৃপ্রাণ

আমি আশু করিব গো ইহার বিধান।।

নারদ চলিয়া গেলে দেবী ভাবে মনে

এত দুঃখ এত তাপ ঘুচাব কেমনে

তুমি মোরে উপদেশ দাও নারায়ণ

যাহাতে নরের হয় দুঃখ বিমোচন।।

লক্ষ্মীবাণী শুনি প্রভু কহেন উত্তর

ব্যথিত কি হেতু প্রিয়া বিকল অন্তর

যাহা বলি, শুন সতি, বচন আমার

মর্ত্যলোকে লক্ষ্মীব্রত করহ প্রচার।।

গুরুবারে সন্ধ্যাকালে যত নারীগণ

পূজা করি ব্রতকথা করিবে শ্রবণ

ধন ধান্য যশ মান বাড়িবে সবার

অশান্তি ঘুচিয়া হবে সুখের সংসার।।

নারায়ণ বাক্যে লক্ষ্মী হরষ মনেতে

ব্রত প্রচারণে যান ত্বরিত মর্তেতে

উপনীত হন দেবী অবন্তী নগরে

তথায় হেরেন যাহা স্তম্ভিত অন্তরে।।

ধনেশ্বর রায় হয় নগর প্রধান

অতুল ঐশ্বর্য তার কুবের সমান

হিংসা দ্বেষ বিজারিত সোনার সংসার

নির্বিচারে পালিয়াছে পুত্র পরিবার।।

একান্নতে সপ্তপুত্র রাখি ধনেশ্বর

অবসান নরজন্ম যান লোকান্তর

পত্নীর কুচক্রে পড়ি সপ্ত সহোদর

পৃথগন্ন হল সবে অল্প দিন পর।।

হিংসা দ্বেষ লক্ষ্মী ত্যাজে যত কিছু হয়

একে একে আসি সবে গৃহে প্রবেশয়

এসব দেখিয়া লক্ষ্মী অতি ক্রুদ্ধা হল

অবিলম্বে সেই গৃহ ত্যজিয়া চলিল।।

বৃদ্ধ রানি মরে হায় নিজ কর্মদোষে

পুরীতে তিষ্ঠিতে নারে বধূদের রোষে

পরান ত্যজিতে যান নিবিড় কাননে

চলিতে অশক্ত বৃদ্ধা অশ্রু দুনয়নে।।

ছদ্মবেশে লক্ষ্মীদেবী আসি হেন কালে

উপনীত হইলেন সে ঘোর জঙ্গলে

সদয় কমলা তবে জিজ্ঞাসে বৃদ্ধারে

কিবা হেতু উপনীত এ ঘোর কান্তারে।।

লক্ষ্মীবাক্যে বৃদ্ধা কহে শোন ওগো মাতা

মন্দভাগ্য পতিহীনা করেছে বিধাতা

ধনবান ছিল পিতা মোর পতি আর

লক্ষ্মী বাঁধা অঙ্গনেতে সতত আমার।।

সোনার সংসার মোর ছিল চারিভিতে

পুত্র পুত্রবধূ ছিল আমারে সেবিতে

পতি হল স্বর্গবাসী সুখৈশ্বর্য যত

একে একে যাহা কিছু হল তিরোহিত

ভিন্ন ভিন্ন হাঁড়ি সব হয়েছে এখন।।

অবিরত বধূ যত করে জ্বালাতন

অসহ্য হয়েছে এবে তাদের যন্ত্রণা

এ জীবন বিসর্জিতে করেছি বাসনা

বৃদ্ধা বাক্যে নারায়ণী কহেন তখন।।

আত্মহত্যা মহাপাপ শাস্ত্রের বচন

ফিরে যাও ঘরে তুমি কর লক্ষ্মীব্রত

সর্ব দুঃখ বিমোচিত পাবে সুখ যত

গুরুবারে সন্ধ্যাকালে বধূগণ সাথে।।

লক্ষ্মীব্রত কর সবে হরষ মনেতে

পূর্ণ ঘটে দিবে শুধু সিঁদুরের ফোঁটা

আম্রশাখা দিবে তাহে লয়ে এক গোটা

গুয়াপান দিবে তাতে আসন সাজায়ে।।

সিন্দূর গুলিয়া দিবে ভক্তিযুক্ত হয়ে

ধূপ দীপ জ্বালাইয়া সেইখানে দেবে

দূর্বা লয়ে হাতে সবে কথা যে শুনিবে

লক্ষ্মীমূর্তি মানসেতে করিবেক ধ্যান।।

ব্রতকথা শ্রবণান্তে শান্ত করে প্রাণ

কথা অন্তে ভক্তিভরে প্রণাম করিবে

অতঃপর এয়োগণ সিঁদুর পরাবে

প্রতি গুরুবারে পূজা যে রমণী করে।।

নিষ্পাপ হইবে সে কমলার বরে

বার মাস পূজা হয় যে গৃহেতে

অচলা থাকেন লক্ষ্মী সেই সে স্থানেতে

পূর্ণিমা উদয় হয় যদি গুরুবারে।।

যেই নারী এই ব্রত করে অনাহারে

কমলা বাসনা তার পুরান অচিরে

মহাসুখে থাকে সেই সেই পুত্রপরিবারে

লক্ষ্মীর হাঁড়ি এক স্থাপিয়া গৃহেতে।।

তণ্ডুল রাখিবে দিন মুঠা প্রমাণেতে

এই রূপে নিত্য যেবা সঞ্চয় করিবে

অসময়ে উপকার তাহার হইবে

সেথায় প্রসন্না দেবী কহিলাম সার।।

যাও গৃহে ফিরে কর লক্ষ্মীর প্রচার

কথা শেষ করে দেবী নিজ মূর্তি ধরে

বৃদ্ধারে দিলেন দেখা অতি কৃপা ভরে

লক্ষ্মী হেরি বৃদ্ধা আনন্দে বিভোর।।

ভূমিষ্ট প্রণাম করে আকুল অন্তর

ব্রত প্রচারিয়া দেবি অদৃশ্য হইল

আনন্দ হিল্লোলে ভেসে বৃদ্ধা ঘরে গেল

বধূগণে আসি বৃদ্ধা বর্ণনা করিল।।

যে রূপেতে বনমাঝে দেবীরে হেরিল

ব্রতের পদ্ধতি যাহা কহিল সবারে

নিয়ম যা কিছু লক্ষ্মী বলেছে তাহারে

বধূগণ এক হয়ে করে লক্ষ্মীব্রত।।

স্বার্থ দ্বেষ হিংসা যত হইল দূরিত

ব্রতফলে এক হল সপ্ত সহোদর

দুঃখ কষ্ট ঘুচে যায় অভাব সত্বর

কমলা আসিয়া পুনঃ আসন পাতিল।।

লক্ষ্মীহীন সেই গৃহে লক্ষ্মী অধিষ্ঠিল

দৈবযোগে একদিন বৃদ্ধার গৃহেতে

আসিল যে এক নারী ব্রত সময়েতে

লক্ষ্মীকথা শুনি মন ভক্তিতে পুরিল।।

লক্ষ্মীব্রত করিবে সে মানত করিল

কুষ্ঠরোগগ্রস্থ পতি ভিক্ষা করি খায়

তাহার আরোগ্য আশে পূজে কমলায়

ভক্তিভরে এয়ো লয়ে যায় পূজিবারে।।

কমলার বরে সব দুঃখ গেল দূরে

পতির আরোগ্য হল জন্মিল তনয়

ঐশ্বর্যে পুরিল তার শান্তির আলয়

লক্ষ্মীব্রত এই রূপে প্রতি ঘরে ঘরে।।

প্রচারিত হইল যে অবন্তী নগরে

অতঃপর শুন এক অপূর্ব ঘটন

ব্রতের মাহাত্ম্য কিসে হয় প্রচলন

একদিন গুরুবারে অবন্তীনগরে।।

মিলি সবে এয়োগন লক্ষ্মীব্রত করে

শ্রীনগরবাসী এক বণিক নন্দন

দৈবযোগে সেই দেশে উপনীত হন

লক্ষ্মীপূজা হেরি কহে বণিক তনয়।।

কহে, এ কি পূজা কর, কিবা ফল হয়

বণিকের কথা শুনি বলে নারীগণ

লক্ষ্মীব্রত ইহা ইথে মানসপূরণ

ভক্তিভরে যেই নর লক্ষ্মীব্রত করে।।

মনের আশা তার পুরিবে অচিরে

সদাগর এই শুনি বলে অহংকারে

অভাগী জনেতে হায় পূজে হে উহারে

ধনজনসুখ যত সব আছে মোর।।

ভোগেতে সদাই আমি রহি নিরন্তর

ভাগ্যে না থাকিলে লক্ষ্মী দিবে কিবা ধন

একথা বিশ্বাস কভু করি না এমন

হেন বাক্য নারায়ণী সহিতে না পারে।।

অহংকার দোষে দেবী ত্যজিলা তাহারে

বৈভবেতে পূর্ণ তরী বাণিজ্যেতে গেলে

ডুবিল বাণিজ্যতরী সাগরের জলে

প্রাসাদ সম্পদ যত ছিল তার।।

বজ্র সঙ্গে হয়ে গেল সব ছারখার

ভিক্ষাঝুলি স্কন্ধে করি ফিরে দ্বারে দ্বারে

ক্ষুধার জ্বালায় ঘোরে দেশ দেশান্তরে

বণিকের দশা যেই মা লক্ষ্মী দেখিল।।

কমলা করুণাময়ী সকলি ভুলিল

কৌশল করিয়া দেবী দুঃখ ঘুচাবারে

ভিক্ষায় পাঠান তারে অবন্তী নগরে

হেরি সেথা লক্ষ্মীব্রত রতা নারীগণে।।

বিপদ কারণ তার আসিল স্মরণে

ভক্তিভরে করজোড়ে হয়ে একমন

লক্ষ্মীর বন্দনা করে বণিক নন্দন

ক্ষমা কর মোরে মাগো সর্ব অপরাধ।।

তোমারে হেলা করি যত পরমাদ

অধম সন্তানে মাগো কর তুমি দয়া

সন্তান কাঁদিয়া মরে দাও পদছায়া

জগৎ জননী তুমি পরমা প্রকৃতি।।

জগৎ ঈশ্বরী তবে পূজি নারায়ণী

মহালক্ষ্মী মাতা তুমি ত্রিলোক মণ্ডলে

গৃহলক্ষ্মী তুমি মাগো হও গো ভূতলে

রাস অধিষ্ঠাত্রী তুমি দেবী রাসেশ্বরী।।

তব অংশভূতা যত পৃথিবীর নারী

তুমিই তুলসী গঙ্গা কলুষনাশিনী

সারদা বিজ্ঞানদাত্রী ত্রিতাপহারিণী

স্তব করে এইরূপে ভক্তিযুক্ত মনে।।

ভূমেতে পড়িয়া সাধু প্রণমে সে স্থানে

ব্রতের মানত করি নিজ গৃহে গেল

গৃহিণীরে গৃহে গিয়া আদ্যান্ত কহিল

সাধু কথা শুনি তবে যত নারীগণ।।

ভক্তিভরে করে তারা লক্ষ্মীর পূজন

সদয় হলেন লক্ষ্মী তাহার উপরে

পুনরায় কৃপাদৃষ্টি দেন সদাগরে

সপ্ততরী জল হতে ভাসিয়া উঠিল।।

আনন্দেতে সকলের অন্তর পূরিল

দারিদ্র অভাব দূর হইল তখন

আবার সংসার হল শান্তি নিকেতন

এইরূপে ব্রতকথা মর্ত্যেতে প্রচার।।

সদা মনে রেখো সবে লক্ষ্মীব্রত সার

এই ব্রত যেই জনে করে এক মনে

লক্ষ্মীর কৃপায় সেই বাড়ে ধনে জনে

করজোড় করি সবে ভক্তিযুক্ত মনে।।

লক্ষ্মীরে প্রণাম কর যে থাক যেখানে

ব্রতকথা যেবা পড়ে যেবা রাখে ঘরে

লক্ষ্মীর কৃপায় তার মনোবাঞ্ছা পুরে

লক্ষ্মীর ব্রতের কথা বড়ো মধুময়।।

প্রণাম করিয়া যাও যে যার আলয়

লক্ষ্মীব্রতকথা হেথা হৈল সমাপন

আনন্দ অন্তরে বল লক্ষ্মী-নারায়ণ

শ্রীশ্রীলক্ষ্মীদেবীর বারমাস্যা।।

বছরের প্রথম মাস বৈশাখ যে হয়

পূজা নিতে এস ওমা আমার আলয়

জ্যৈষ্ঠ মাসে ষষ্ঠী পূজা হয় ঘরে ঘরে

এসো বসো তুমি ওমা পূজার বাসরে

আষাঢ়ে আসিতে মাগো নাহি করো দেরি

পূজা হেতু রাখি মোরা ধান্য দুর্বা ধরি

শ্রাবণের ধারা দেখ চারি ধারে পড়ে

পূজিবারে ও চরণ ভেবেছি অন্তরে।।

ভাদ্র মাসে ভরা নদী কুল বেয়ে যায়

কৃপা করি এসো মাগো যত শীঘ্র হয়

আশ্বিনে অম্বিকা সাথে পূজা আয়োজন

কোজাগরী রাতে পুনঃ করিব পূজন।।

কার্তিকে কেতকী ফুল চারিধারে ফোটে

এসো মাগো এসো বসো মোর পাতা ঘটে

অঘ্রাণে আমন ধান্যে মাঠ গেছে ভরে

লক্ষ্মীপূজা করি মোরা অতি যত্ন করে।।

পৌষপার্বনে মাগো মনের সাধেতে

প্রতি গৃহে লক্ষ্মী পূজি নবান্ন ধানেতে

মাঘ মাসে মহালক্ষ্মী মহলেতে রবে

নব ধান্য দিয়া মোরা পূজা করি সবে।।

ফাল্গুনে ফাগের খেলা চারিধারে হয়

এসো মাগো বিষ্ণুজায়া পূজিগো তোমায়

চৈত্রেতে চাতক সম চাহি তব পানে

আসিয়া বস ওমা দুঃখিনীর ভবনে।।

লক্ষ্মীদেবী বারমাস্যা হৈল সমাপন।

ভক্তজন মাতা তুমি করহ কল্যাণ।।

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর প্রকৃষ্ট সময় কিন্তু প্রদোষকাল অর্থাৎ সন্ধেবেলা (Evening)। সূর্যাস্তের পর থেকে দু'ঘণ্টা পর্যন্ত যে সময় সেই সময়ই এই পুজোর জন্য আদর্শ। প্রদোষ থেকে রাত্রি পর্যন্ত তিথি থাকলেও প্রদোষেই পুজো বিহিত। তবে আগেরদিন রাত্রি থেকে পরদিন প্রদোষ পর্যন্ত তিথি থাকলেও পরদিন প্রদোষেই পুজো করা বিধেয়। আবার আগের দিন রাতে তিথি থাকলেও যদি পরদিন প্রদোষে তিথি না থাকে তাহলে আগেরদিন প্রদোষেই পুজো করা কর্তব্য।