পুরাতন আগরতলার যা এখন খয়েরপুর চতুর্দশ দেবতাবাড়িতে আজ থেকে শুরু ৭ দিনের খার্চি পূজা। ত্রিপুরা রাজ্যের সবচেয়ে প্রাচীন পুজো খার্চি পুজো।খার্চি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল, খার ও চি। খার কথার অর্থ হল পাপ এবং চি কথার অর্থ হল পরিষ্কার বা মোচন করা। এক কথায় পাপ মোচন করা। ৩০০০ বছর আগে এই পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছিল ত্রিপুরার রাজ পরিবারে, এবং বর্তমানে এই পুজো মুলত ত্রিপুরার রাজ পরিবার এবং ত্রিপুরী রাজ চন্তাই দের পৃষ্ঠপোষকতায় চলে আসছে। পুজোর পুরোহিতকে চন্তাই বলা হয়। এই রাজ চন্তাইরা বংশ পরম্পরায় নির্বাচিত হয়ে আসে এবং এদেরকে রাজার প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৪৯ সাল থেকে চুক্তি অনুযায়ী পুজো খরচ সরকার বহন করে। ত্রিপুরার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উপজাতি মানুষ পুজোয় ভিড় জমান।
প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লঅষ্টমী তিথিতে পুজো শুরু হয়। ভোরে ১৪জন দেবতাকে নদীতে স্নান করিয়ে মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। চতুর্দশ দেবতার কোন অবয়ব নেই, শুধুমাত্র অষ্ট ধাতুর নির্মিত তাঁদের মুখমণ্ডলকে পুজো করা হয়। এই চতুর্দশ দেবতারা ত্রিপুরা রাজাদের কুলদেবতা, তাঁরা হলেন— হর (শঙ্কর), উমা (শঙ্করী), হরি (বিষ্ণু), মা (লক্ষ্মী), বাণী (সরস্বতী), কুমার (কার্ত্তিকেয়), গণপা (গণেশ), বিধি (ব্রহ্মা), ক্ষ্বা (পৃথিবী), অব্ধি (সমুদ্র), ভাগীরথী (গঙ্গা), শিখি (অগ্নি), কামদেব (প্রদ্যুম্ন) ও হিমাদ্রি (হিমালয় পর্ব্বত)। হর, উমা, হরি, এই তিন দেবদেবী নিত্য পূজিত হন। কিন্তু আষাঢ় মাসের শুক্লাষ্টমীতে একত্রে পূজিত হন চৌদ্দ দেবতা।
প্রাথমিক ভাবে এটা ত্রিপুরীদের উৎসব হলেও বর্তমানে সব ধর্মের মানুষ এতে সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে।৭দিন ব্যাপী চলা এই পূজা আসলে জাতি ও উপজাতির এক মহান মিলন মেলা হিসাবে ধরা হয়।