বর্ষার মরসুমে দেখতে পাওয়া যায় অনেক ধরনের রোগের তান্ডব, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মশাবাহিত রোগ। প্রতি বছর ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বিপুল সংখ্যক মানুষকে। বর্তমানে ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে মানুষকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর পাশাপাশি বর্তমানে বেড়েছে টাইফয়েডের ঝুঁকিও, তাই এই বিষয়েও সতর্ক থাকা জরুরি। বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়তে শুরু করেছে টাইফয়েডের ঘটনাও। সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট টাইফয়েড জ্বরকে আন্ত্রিক জ্বরও বলা হয়। মশার কামড়ের সঙ্গে টাইফয়েডের সম্পর্ক নেই।
টাইফয়েড সংক্রমণের লক্ষণগুলি ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসার ফলে দেখা দেয় ১ থেকে ৩ সপ্তাহ পর। এই রোগের লক্ষণগুলো হল হালকা থেকে উচ্চ জ্বর, ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা, পেশী ও পেটে ব্যথা, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি সহ ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। সময় মতো এই রোগের চিকিৎসা না করা হলে কয়েক সপ্তাহ পরে অন্ত্রের সমস্যাও তৈরি হতে পারে। এর ফলে পেট ফুলে যাওয়া, সারা শরীর জুড়ে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে। টাইফয়েড জ্বরের কারণে অন্ত্রের ক্ষতি এবং রক্তপাতের ঝুঁকিও থাকে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত খাবার খেলে ও জল পান করলে হয় টাইফয়েড জ্বর। অনেক ক্ষেত্রে সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও হতে পারে টাইফয়েড। টাইফয়েড জ্বরের একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা হল অ্যান্টিবায়োটিক। অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার মাধ্যমে ১ সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে অনেকেই, তবে সময়মতো চিকিৎসা না করালে এই রোগ হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক। টাইফয়েড প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যায় যা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। দৈনন্দিন জীবনে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। ফিল্টার করা জল পান করতে হবে। ২ দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।