একজন মানুষ তার মৃত্যুর পর চক্ষু দানের সিদ্ধান্ত নিলে অন্য একজন মানুষের জীবনের অন্ধকার দূর হয়ে জগতের আলোর সঙ্গে পরিচিত হয়। এই আলো তার নতুন জীবনকে আলোকিত করে তোলে। চক্ষুদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রতি বছর ২৫ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পালন করা হয় জাতীয় চক্ষুদান পাক্ষিক। এই সময়ে গোটা দেশে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আয়োজন করা হয় সেমিনার, সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান এবং কর্মশালা, যাতে মানুষ চক্ষুদান নিয়ে ভুল ধারণার পেছনের সত্যতা বুঝতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চক্ষুদান মানবতার এক অমূল্য অবদান। চক্ষুদানের মাধ্যমে একজন অন্ধ ব্যক্তি পেতে পারে নতুন জীবন। একজন অন্ধ ব্যক্তিকে চোখ দান করার মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তির পাশাপাশি তাদের জীবনের মান উন্নত করা হয় এবং তাদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং স্বাধীনতার সুযোগ দেয়। চক্ষুদানের মাধ্যমে আমরা মৃত্যুর পরেও অন্যদের সাহায্য করতে পারি। চক্ষুদানও এক ধরনের সামাজিক দায়িত্ব। চক্ষুদানকে বলা হয় কর্নিয়া প্রতিস্থাপনও। এটি কর্নিয়াল অন্ধত্বে আক্রান্তদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য মৃত্যুর পরে কাউকে চোখ দান করার প্রক্রিয়া।

বর্তমান যুগেও কর্নিয়াল অন্ধত্বে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা লক্ষাধিক। চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্নিয়াল প্রতিস্থাপন অন্ধদের জীবনে আশার আলো প্রদান করে। ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অফ ব্লাইন্ডনেস অ্যান্ড ভিজ্যুয়াল ইমপেয়ারমেন্ট (NPCBVI) অনুসারে, কর্নিয়াল অন্ধত্বে ভুগছেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। কর্নিয়াল ট্রান্সপ্লান্ট হল একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর চোখে দাতার কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেন সার্জন। কর্নিয়া প্রতিস্থাপন একটি সফল প্রক্রিয়া হতে পারে, যার ফলে রোগীর দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয়। অস্ত্রোপচারের পরে কিছু ঝুঁকি থাকে, তাই সার্জারির পর নিয়মিত চেক-আপ এবং যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।