ভারতীয় রান্নাঘরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ মিষ্টি এবং পুষ্টির প্রতীক গুড়। শীতের মরসুমে বাড়ি বাড়ি তৈরি হয় গুড়ের মিষ্টি, গুড়ের পিঠে পায়েসের মতো খাবার এবং প্রায় সকলেই এগুলো খেতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু বর্তমান যুগে বাজারে ভেজাল গুড়ও পাওয়া যায়। ভেজালের কারণে গুড়ের প্রাকৃতিক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে খাঁটি গুড় শনাক্ত করা খুবই জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক আসল ও নকল গুড় চেনার কিছু সহজ উপায়।
খাঁটি গুড়ের স্বাদ মিষ্টি এবং সামান্য মাটির গন্ধ থাকে। গুড়ের স্বাদ যদি অতিরিক্ত মিষ্টি, রাসায়নিক বা মশলাদার মনে হয় তবে তা ভেজাল হতে পারে। খাঁটি গুড় গরমে সমানভাবে গলে যায় এবং ঘন তরল তৈরি করে। নকল গুড় গলে গেলে চিনির স্ফটিক বা অবশিষ্টাংশ ছেড়ে যেতে পারে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া অনুসারে, খাঁটি গুড়ের রং সবসময় গাঢ় হয়। বাজারে বিক্রি হওয়া সোনালি হলুদ গুড় এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া FSSAI-এর মতে, ভেজাল হলে গুড়ের পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্যও বিপজ্জনক।
খাঁটি গুড়ের রং হালকা বাদামী বা সোনালি হলুদ হয়, তবে গুড়ের রং যদি খুব বেশি উজ্জ্বল হয় তাহলে সেটি আকর্ষণীয় হলেও মনে রাখতে হবে সেই গুড়ে কৃত্রিম রং যুক্ত করা হয়েছে। এটি পরীক্ষা করার জন্য, এক ছোট টুকরো গুড় জলে ভেজানোর পর জলের রং পরিবর্তন হলে বুঝতে হবে গুড়ে রং যোগ করা হয়েছে। এছাড়া অনেক সময় ওজন বাড়াতে গুড়ের সঙ্গে যোগ করা হয় চক পাউডার বা ওয়াশিং সোডা। এটি সনাক্ত করতে, এক টুকরো গুড় জলে ভেজানোর পর জলের নিচে সাদা অবশিষ্টাংশ দেখা গেলে বুঝতে হবে সেই গুড় ভেজাল।
গুড়ের গঠনও এর বিশুদ্ধতা নির্দেশ করে। খাঁটি গুড় হালকা নরম, সহজে ভাঙ্গা যায় এবং সামান্য আঠালো হয়। অন্যদিকে ভেজাল গুড় শক্ত এবং দানাদার মনে হতে পারে কারণ এতে চিনির স্ফটিক বা অন্যান্য রাসায়নিক যোগ করা হয়। এছাড়া গুড়কে আকর্ষণীয় দেখাতে এবং শেলফ লাইফ বাড়াতে ব্যবহার করা হয় সালফার যৌগ। এটি পরীক্ষা করার জন্য, জলে গুড় ভেজানোর পর কয়েক ফোঁটা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড যোগ করলে যদি ফেনা বা বুদবুদ তৈরি হয় তবে এটি সালফার ভেজালের লক্ষণ।