Credit: Freepik

হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্ক উভয়ই শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হৃৎপিণ্ডের কাজ শরীরে রক্ত সরবরাহ করা এবং নতুন চিন্তা, আবেগ ও কাজ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। মানুষের শরীরে ১০০ বিলিয়নেরও বেশি নিউরন রয়েছে, এর মধ্যে মস্তিষ্কে রয়েছে প্রায় ৮৬ বিলিয়ন নিউরন এবং মাত্র ৪-৫ হাজার রয়েছে হৃৎপিণ্ডে, যা হৃৎস্পন্দন ও রক্ত সঞ্চালন করতে হৃৎপিণ্ডকে সাহায্য করে। বিশ্বাস করা হয় যে মস্তিষ্ক পুরো শরীর নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিটি অঙ্গ মস্তিষ্কের নির্দেশে কাজ করে, এমনকি হৃদয়কেও নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারণা সম্পূর্ণ সত্য নয়। অনেক গবেষণায় জানা গেছে যে হৃৎপিণ্ড মস্তিষ্ক থেকে আদেশ নেয় না বরং আদেশ দেওয়ার কাজ করে।

হৃৎপিণ্ড নিজের ইচ্ছার মালিক, কোনও কাজ করার জন্য মস্তিষ্ক থেকে আদেশ নেওয়ার দরকার নেই হৃৎপিণ্ডের। দুজনে মিলে শরীর চালায়, এই কাজের জন্য দুজনেই একে অপরকে প্রভাবিত করে। এমন অনেক সময় দেখা গিয়েছে যে কখনও কখনও দুর্ঘটনা ঘটলে ব্রেন ডেড হয়ে গেলেও হৃৎপিণ্ড চলতে থাকে, তবে হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার ৩-৪ মিনিটের মধ্যে ব্রেন ডেড হয়ে যায়। ১৯৬০-৭০-এর দশকে, জন এবং লেসি নামে দুজন সাইকোফিজিওলজিস্টের গবেষণায় প্রথমবার জানা যায় যে হৃৎপিণ্ড শরীরের অন্যান্য অঙ্গের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। হৃৎপিণ্ড মস্তিষ্কে ক্রমাগত বার্তা পাঠাতে থাকে এবং মস্তিষ্কও তার উপর কাজ করে অর্থাৎ হৃদয়ের আদেশ পালন করে মস্তিষ্ক।

জন এবং লেসি আরও খুঁজে পেয়েছেন যে হৃদয় থেকে আসা বার্তাগুলি একজন ব্যক্তির আচরণ এবং কর্মক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে। মস্তিষ্ক হৃদয়কে যতটা তথ্য প্রদান করে তার চেয়ে হৃদয় মস্তিষ্ককে বেশি তথ্য প্রদান করে। বিজ্ঞানীদের মতে, হৃদয় কঠোর পরিশ্রম করে, দাঁড়ানো বা বসে থাকার মতো ছোট ছোট জিনিসের জন্যও হৃদয়কে অনেক কাজ করতে হয়। তাকে প্রতিবার নিখুঁত পয়েন্ট সামঞ্জস্য করতে হয়, যাতে রক্তচাপের মাত্রা বজায় থাকে। হৃৎপিণ্ড এমন না করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, যার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মানুষের আচরণ এবং আবেগকে প্রভাবিত করে হৃদয়। ব্যথা এবং বিষণ্নতার মতো অনুভূতিও অনুভব করতে পারে হৃৎপিণ্ড। হার্টও শরীরকে দুর্বল করে দিতে পারে এবং মস্তিষ্ককে অসুস্থ করে তুলতে পারে।