কলকাতা : গেমিং ডিসঅর্ডার সম্প্রতি শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে । কোভিডের সময় অনলাইন শিক্ষা শুরু হয় যাতে বাচ্চাদের পড়ালেখা বন্ধ না হয়, তবে বাচ্চারা পড়াশোনার পরে তাদের একঘেয়েমি কাটাতে গেম খেলতে মোবাইল ব্যবহার করছিল। সেই অভ্যাস এখন এক ধরনের ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
আগে যেখানে ১৮ বছরের বেশি বয়সী যুবকদের মধ্যে এই অ্যাডিকশন দেখা যেত, সেখানে এখন ছোট শিশুরাও এতে মগ্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) গেমিং ডিসঅর্ডারকে (Gaming Disorder) আন্তর্জাতিক রোগের ক্যাটাগরিতে ফেলেছে।
গেমিং ডিসঅর্ডার কি?
গেমিং ডিসঅর্ডার একটি মানসিক রোগ, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দ্বারাও স্বীকৃত। গেমিং ডিসঅর্ডার রোগটি হয় যখন একজন ব্যক্তি গেম খেলার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে, সে চাইলেও গেম খেলার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারে না। গেম খেলার এই আসক্তির কারণে তার কাজ, ঘুম, বলতে গেলে পুরো লাইফস্টাইলই ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। যখন গেমিংয়ের অভ্যাস কোনও ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক, কাজ, পড়াশোনা বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে প্রভাবিত করতে শুরু করে, তখন বুঝতে হবে আপনি গেমিং ডিজঅর্ডারের শিকার হয়েছেন।
লক্ষণগুলি জেনে নেওয়া যাক-
সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন
গেমিংয়ে আসক্ত ব্যক্তি সামাজিকভাবে পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের থেকে দূরে সরে যান। তিনি গেম খেলায় এতটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে তার চারপাশে কি ঘটছে তা তিনি খেয়ালই করেন না। এক সময় এ ধরনের মানুষ একাকীত্বের শিকার হয়। যা ভবিষ্যতে বিষণ্নতার কারণও হয়ে উঠতে পারে।
পেশাগত এবং শিক্ষাগত সমস্যা
সব সময় গেম খেলার অভ্যাস দৈনন্দিন কাজে প্রভাব ফেলে। এই ব্যাধিটি উত্পাদনশীলতা হ্রাস, দুর্বল কর্মক্ষমতা, অনুপস্থিতি বা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবহেলা হতে পারে।
মানসিক সমস্যা
যদি কোনও ব্যক্তির মানসিক সমস্যা, বিষণ্নতা, খিটখিটেভাব এসব থেকে থাকে তাহলে গেমিং আসক্তি তাদের মানসিক অবস্থাকে আরও খারাপ করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন : Thread: টুইটারকে কড়া প্রতিযোগীতা থ্রেডসের, আসছে আরও নতুন ফিচার
অর্থনৈতিক সমস্যা
কিছু ক্ষেত্রে, গেমিং ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি অর্থ উপার্জনের মতো আর্থিক দায়িত্বের চেয়ে গেম খেলতে বেশি পছন্দ করতে পারে, যার কারণে তাকে অর্থের অভাবের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
শিশুদের কিভাবে অনলাইন গেম থেকে দূরে রাখবেন?
প্রথমত শিশুকে মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
বাচ্চারা যেন আপনাকে বিরক্ত না করে এই ভেবে তাদের হাতে মোবাইল দেবেন না।
যদি শিশুদের মোবাইল দেওয়া হয়, তাহলে তাদের মনিটরিং করতে থাকুন।
কেউ যদি একটি সাইটে খুব বেশি সময় ব্যয় করে তবে সতর্ক হন।
নিজে নিজে বাচ্চাদের সঙ্গে দাবা, লুডো বা আউটডোর গেম খেলুন।
অপ্রয়োজনে অ্যাপস ডাউনলোড করবেন না, রাতে বাচ্চাদের মোবাইল দেবেন না।