বিশ্ব হাতি দিবস হল একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ। হাতিদের সংরক্ষণ করার জন্য ও নিরাপদ রাখার জন্য, হাতিদের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য পালন করা হয় বিশ্ব হাতি দিবস। হাতির সংখ্যা হ্রাস, তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হারানো এবং মানব-হাতি সংঘর্ষের মতো গুরুতর চ্যালেঞ্জগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল এই দিনটি পালন করার প্রধান উদ্দেশ্য। প্রতি বছর ১২ আগস্ট পালন করা হয় বিশ্ব হাতি দিবস। ২০১২ সালে প্রথমবার পালন করা হয় এই দিনটি। বিশ্ব হাতি দিবস পালন করা শুরু করে কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা প্যাট্রিসিয়া সিমস এবং থাইল্যান্ডের এলিফ্যান্ট রিইনট্রোডাকশন ফাউন্ডেশন। এই দিনটি পালনের উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী হাতি সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

বিশ্ব হাতি দিবস পালন করার পেছনে রয়েছে অনেকগুলো কারণ। হাতির দাঁতের চোরাচালান এবং হাতিদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে সারা বিশ্বে দ্রুত কমছে হাতির সংখ্যা। বর্তমানে আফ্রিকান হাতির সংখ্যা কমে হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ এবং এশিয়ান হাতির সংখ্যা কমে হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। মানুষের বসতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষের ঘটনা। এর ফলে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মানুষ। এছাড়া বন উজাড় এবং নগরায়নের কারণে দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের খাদ্য ও পানির উৎস, যার কারণে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে হাতিদের। হাতির দাঁতের চাহিদা বেশি থাকার কারণে বেড়ে গিয়েছে হাতি শিকার। তাদের সংখ্যা কমার একটি বড় কারণ হল এটি।

হাতিদের সংরক্ষণ এবং তাদের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিশ্ব হাতি দিবস গুরুত্বপূর্ণ। মানুষকে হাতির গুরুত্ব, তাদের সমস্যা এবং তাদের সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে সচেতন করা হয় এই দিনে। সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং বিভিন্ন সম্প্রদায় হাতি সংরক্ষণের জন্য নতুন ব্যবস্থা এবং নীতি বিবেচনা করে এই দিনে। বিশ্ব হাতি দিবস একটি বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে যেখানে হাতিদের রক্ষার জন্য মানুষ, সংস্থা এবং সরকার তাদের প্রচেষ্টা তুলে ধরে। স্থানীয় সম্প্রদায়গুলিকে হাতির সঙ্গে সহাবস্থান করতে এবং তাদের সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে অনুপ্রাণিত করে এই দিনটি৷ বিশ্ব হাতি দিবস মনে করিয়ে দেয় হাতি আমাদের বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।