দেবাদি দেব মহাদেবের ঘটা করে পুজো হয় শিবরাত্রির দিন। কিন্তু মহাশিবরাত্রি (Maha Shivratri) কেন পালন করা হয়? পুরাণে উল্লেখ পাওয়া যায় তিনটি কাহিনীর৷ প্রথমত, বলা হয় এ দিনই পার্বতী শিবকে স্বপ্নে পেয়েছিলেন৷ আবার এদিনই মহাদেবের নাকি বিয়ে হয়েছিল পার্বতীর সঙ্গে৷ তাই হিন্দুরা এই দিনটিতে মহাদেবের পুজো করেন মহা-আড়ম্বরের সঙ্গে৷ এই কারণে নেপালে মন্দিরগুলোকে সাজানো হয় মহাশিবরাত্রির তিন দিন আগে থেকেই। বরণ কনে সাজিয়ে ঘরে-ঘরে ঘোরানো হয় পার্বতী এবং শিবের মূর্তিকে। ওদের বিয়েও দেওয়া হয় মহাশিবরাত্রির দিন।
দ্বিতীয়ত, সকলেই জানেন দেবতা আর অসুররা যখন সমুদ্রমন্থন করেন তখন ভয়াবহ বিষ উঠতে থাকে সমুদ্র থেকে৷ সমস্ত সৃষ্টি নষ্ট হতে বসে বিষের উগ্রতায়৷ তখন মহাদেব সেই ভয়াবহ গরল কণ্ঠে ধারণ করেন এই বিশ্ব-চরাচরকে বাঁচাতে৷ আরও পড়ুন, শিবরাত্রিতে যে শক্তিশালী মন্ত্র জপ করলেই টাকা আসবে হু-হু করে...
তৃতীয়ত, একবার প্রবল লড়াই বেঁধেছিল ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর মধ্যে৷ চলছিল গন্ডগোল দেবতাদের মধ্যে কে বড় আর কে ছোট এই নিয়ে৷ মহাদেব প্রচণ্ড রেগে যান তাই দেখে৷ আগুনের গোলকে রূপান্তরিত হয় শিবের সেই রাগ, যা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমান৷ ব্রহ্মা ও বিষ্ণু তখন নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে প্রতিযোগিতায় নামেন কে আগে আগুনের শেষ খুঁজে বের করতে পারে। কিন্তু কেউই সক্ষম হন না৷ তখন মহাদেব আবির্ভূত হন শিবলিঙ্গের রূপে৷ তখন বিষ্ণু এবং ব্রহ্মা প্রথম শিবলিঙ্গের পুজো করেন মহাশিবরাত্রির তিথিতে৷ আরও বলা হয় যে, শিবের রূদ্র রূপ প্রকাশ করেন ব্রহ্মা নিজে মহাশিবরাত্র্রিতে। এদিনে শিবলিঙ্গের পুজো করা হয় এরপর থেকেই৷
তাই এতগুলি মতকে মান্যতা দিয়ে সারা রাত ধরে চলে এই শিবের আরাধনা। শিবের আরাধনা ও অনেকগুলি পুজো হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্বন আজকের মহাশিবরাত্রি। আজকের দিনে স্বচ্ছভাবে, সুন্দরভাবে, সাত্বিকভাবে পুজো করতে চন্দন, বেলপাতা, আকন্দ, দুধ দিয়ে আরাধনা করতে হবে। সারারাতব্যাপী প্রহরে প্রহরে চলবে জল ঢালার পর্ব।