ললিতা পঞ্চমী, হিন্দুধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। দেবী ললিতা ত্রিপুরা সুন্দরীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পালন করা হয় ললিতা পঞ্চমী। ২০২৪ সালে ললিতা পঞ্চমী পালন করা হবে ৭ অক্টোবর, সোমবার। এই দিনে উপাসনা করলে দেবী ললিতা ত্রিপুরা সুন্দরীর আশীর্বাদ লাভ হয়। হিন্দু ধর্মে ললিতা পঞ্চমীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শক্তি ও করুণার প্রতীক হওয়ার পাশাপাশি ভক্তদের বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও বস্তুগত সুবিধাও প্রদান করে দেবী ললিতা ত্রিপুরা সুন্দরীর।
ললিতা পঞ্চমীকে মোক্ষলাভের প্রবেশদ্বার বলে মনে করা হয়। মান্যতা রয়েছে, এই দিনে দেবী ললিতার পুজো করলে জীবন পাপ মুক্ত হয়, আত্মা পবিত্র হয় এবং মোক্ষ লাভ হয়। ললিতা পঞ্চমীকে সুখ ও সমৃদ্ধির দিন বলে মনে করা হয়। এই দিনে দেবী ললিতার পুজো করলে জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। ললিতা পঞ্চমীকে ইচ্ছা পূরণের দিন হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। এই দিনে শুদ্ধ চিত্তে দেবী ললিতার পুজো করলে মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়।
ললিতা পঞ্চমীর পৌরাণিক কাহিনীর উল্লেখ রয়েছে ব্রহ্ম বৈবর্ত পুরাণে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, শক্তি এবং সৃষ্টি পরিচালনায় ভূমিকা রয়েছে দেবী ললিতা ত্রিপুরা সুন্দরীর। এক সময় ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের মধ্যে কে সবচেয়ে শক্তিশালী দেবতা তা নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। এই বিবাদের অবসানের জন্য, শিব আদিশক্তি, দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীকে আমন্ত্রণ জানান। দেবী ত্রিপুরা সুন্দরী তার স্বামী কামদেব এবং তার স্ত্রী রতির সঙ্গে মহাবিশ্ব ভ্রমণ করেন।
এই ভ্রমণ চলাকালীন দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীকে প্রলুব্ধ করার জন্য শিব কামদেবের উপর তার ত্রিশূল ব্যবহার করেন, যার ফলে কামদেব ভস্মে পরিণত হন। দেবী ত্রিপুরা সুন্দরী ক্রুদ্ধ হয়ে তার ঐশ্বরিক রূপ নেন, তার আশ্চর্য শক্তি এবং সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করেন শিব। দেবী ত্রিপুরা সুন্দরী শিবকে আশীর্বাদ করে সৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এই ঘটনার পর থেকে দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীর বিজয়ের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয় ললিতা পঞ্চমী।