কলকাতা, ২১ ফেব্রুয়ারী: আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day)। বিশ্বজুড়ে পালন হয় ২১ শে ফেব্রুয়ারি। বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের লড়াইয়ের ফল এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সালাম-বরকত-রফিক-শফিক-জব্বার আরও কত নাম না-জানা সেসব শহীদের আত্মত্যাগকে মনে করায় আজকের এই দিন। তাদের লড়াইয়েই আমরা কারও চাপিয়ে দেওয়া ভাষায় নয় মাতৃভাষায় পরিচয় পেয়েছি। জাতিসংঘের স্বীকৃতির ফলে একুশে ফেব্রুয়ারি (21st February)আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (CM Mamata Banerjee) আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন। অমর ২১' শের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন।
সকলকে জানাই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা। আমাদের মাতৃভাষা সহ আমরা সব ভাষাকেই ভালোবাসি
On #InternationalMotherLanguageDay my best wishes to all. We love all the languages including our mother tongue
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 21, 2020
আজ অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি। বাংলাজুড়ে পালিত হচ্ছে ভাষা শহিদ দিবস। এই ঐতিহাসিক দিনে বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 21, 2020
মহান ভাষা আন্দোলনের দিন হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি প্রতিবছরই মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশসহ (Bangladesh) বিশ্বের অনেক দেশে পালিত হয়ে আসছে। এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা রাজ্যে ‘বাংলা ভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হয় এই দিনটি। ২১ ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করার আগে, দিনটি মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দাবি শোনা যায়। তবে এ বিষয়ে প্রথম সফল উদ্যোক্তারা হলেন কানাডার বহুভাষিক ও বহুজাতিক মাতৃভাষা-প্রেমিকগোষ্ঠী।এরাই প্রথমে ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ নামে একটি দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করে। সেখানে তাঁরা উল্লেখ করেন, বাঙালিরা তাদের মাতৃভাষাকে রক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেটা ছিল তাদের ভাষার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কাজেই মাতৃভাষা দিবসের দাবিটি খুবই ন্যায়সংগত। আরও পড়ুন, অরুণাচলে অমিত শাহ, রেগে আগুন চিন
মাতৃভাষা আন্দোলনের এক বিস্তর ইতিহাস রয়েছে। মাতৃভাষা আন্দোলন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হয়ে ওঠার পিছনেও রয়েছে বিস্তারিত ইতিহাস। পাকিস্তানের উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে নেয়নি সেদিনের ২১ শের রক্তে রাঙানো ভাইয়েরা। আর এর আন্তর্জাতিক তকমা পেতেও কানাডাপ্রবাসী বাঙালি আবদুস সালাম ও রফিকুল ইসলাম (যাঁরা মাতৃভাষা-প্রেমিকগোষ্ঠীর সদস্য)-র ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে ইউনেসকোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেন তারা। প্রথমে টেলিফোনে এবং পরে চিঠিতে। ১৯৯৯ সালের ৩ মার্চ ইউনেসকো সদর দপ্তরের ভাষা বিভাগের কর্মকর্তা আন্না মারিয়া একটি চিঠিতে রফিকুল ইসলামকে জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার তোমাদের অনুরোধটি বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা লাভ শুধু বাংলা ভাষার বিশ্ববিজয় নয়; পৃথিবীর সব মাতৃভাষার বিজয়।