ধনতেরাস (Photo Credit: File Photo)

Dhanteras : ধনতেরাস তো ধনলক্ষ্মীর উপাসনা। এদিন একই সঙ্গে কুবের ও লক্ষ্মীর আরাধনা হয় গৃহস্থের বাড়িতে। মা-লক্ষ্মী ও কুবেরের সামনে কলাপাতা বিছিয়ে তাতে ১৩টি প্রদীপ দান করতে হয়। যাকে বলা হচ্ছে ত্রায়োদশ দীপদান। এই সময় খেয়াল রাখবেন যেন দীপগুলি দক্ষিণমুখী রাখা থাকে, গোটা সময়টা এই মন্ত্র 'মৃত্যু না পাশদন্তা ভ্যাং কাল শ্যামলয়াসহ। ত্রায়োদশ্যাং দীপদানৎ সূর্যজঃ প্রীয়তামিতি।' পড়তে থাকুন। যমরাজের উদ্দেশে ঘি-কর্পূর সহযোগে এই দীপ জ্বালাতে হয়। এরপর দুটি দীপকে ঘি সহযোগে উৎসর্গ করার পর বীজমন্ত্র পাঠ করতে হবে। কুবেরের প্রণাম-মন্ত্র- 'ঔঁ যক্ষায় কুবেরায় বৈশ্রবণায় ধনধান্যাদিপতয়ে ধনধান্যসমৃদ্ধিং মে দেহি দাপয় স্বাহা।' কুবেরের বীজমন্ত্র- 'ঔঁ শ্রীং ঔঁ হ্রীংশ্রীং হ্রীং ক্লীং শ্রীং ক্লীং বিত্তেশ্বরায় নমঃ।

এদিক ১৩ প্রদীপ জ্বালানোর পিছনে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। কথিত আছে, রাজা হংস এক ঘোর প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিকারে বের হয়েছিলেন। কিন্তু প্রবল বৃষ্টি আর বজ্রপাতে রাজা হংস তাঁর সৈন্য দলের থেকে আলাদা হয়ে যান। প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে দিশেহারা হয়ে রাজা হিমা-র রাজ্যের সীমানায় ঢুকে পড়েন হংস। হিমার সৈন্যরা রাজা হংসকে রাজসভায় নিয়ে যান হিমা হংসকে সাদরে অভ্যর্থনা করেন। সেই রাতেই হিমার পু্ত্র সন্তান জন্মায়। এদিকে রাজ জ্যোতিষীর সতর্কবাণী মনে পড়তেই হিমার বুক শুকিয়ে যায়। কোনও মহিলার সংস্পর্শে এলে চারদিনের মাথায় রাজপুত্রের মৃত্যু হবে। কোনওভাবেই মহিলারা যাতে রাজপুর্তের ধারেকাছে ঘেঁষতে না পারেন সেজন্য কড়া পাহাড়ার বন্দোবস্ত করা হয়। রাজপুত্রকে ব্রহ্মচর্যে দিজ্ঞাও দেওয়া হয়। হিমা রাজপুত্রকে নিয়ে যমুনার তীরে যান। সেখানেই একদিন রাজ হংসের অপূর্ব সুন্দরী কন্যাকে দেখে পেলেন হিমার পুত্র। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যান। বাবার নির্দেশ ভুলে ব্রহ্মচর্য ভুলে হংসের কন্যাকে গান্ধর্ব মতে বিয়ে করে ফেল রাজপুত্র। এদিকে সমস্ত খবর পেয়ে ছেলের প্রাণ সংশয়ের চিন্তায় হংসের কন্যার কাছে ছুটে আসেন হিমা। গোটা বিষয়টি তাঁকে জানিয়ে দেন। আরও পড়ুন-Dhanteras 2019: এই ধনতেরাসে আধুনিকাদের প্রথম পছন্দ হালকা ওজনের স্টাইলিশ দুল

সব শুনে হংস কন্যা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এর চারদিন পরেই ছিল ধনতেরাস, তিনি জানতে পারেন ওদিন কুবেরের পুজো করলে সমস্ত বিপদ কেটে যায়। সেইমতো যাবতীয় মণিমানিক্য অলঙ্কার নিয়ে কুবেরর উদ্দেশে অর্পণ করেন হংসকন্যা। শুরু হয় মন্ত্রোচ্চারণ, এদিকে যমরাজ সাপের ছদ্মবেশে তখন রাজপুত্রেক ছোবল দিতে আসছিল, পথে এত স্বর্ণালংকার ও মণিমাণিক্য দেখে তার চোখ ধাঁধিয়ে যায়। সব ভুল হয়ে যায়। রাত পোহাতেই ফের ঘোর কাটে ছোবলের চেষ্টা করতে হংস কন্যা রুখে দেন। কারণ পঞ্চম দিনটি শুরু হয়ে গিয়েছে আর রাজপুত্রকে দংশন করা যাবে না। হংস কন্যার বুদ্ধিতে খুশি হয় যমরাজ। এই সময় থেকেই চলে আসছে ধনতেরাসের দিন বাড়িতে ১৩টি প্রদীপ জ্বালালে অকালমৃত্যু রোধ করা যায়, সংসারে অর্থকষ্টও থাকে না।