শিখ সম্প্রদায়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল হোলা মহল্লা। গোটা বিশ্বের শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা পালন করে এই উৎসব। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আনন্দপুর সাহেবে আসেন এই উৎসবটি দেখতে। হোলা মহল্লা উৎসব সাধারণত হোলির পরের দিন থেকে শুরু হয়। ২০২৪ সালে এই উৎসব পালন করা হবে ২৫ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত। শিখদের পবিত্র স্থান, আনন্দপুরের তখত শ্রী কেসারগড় সাহেবে পালন করা হবে এই উৎসব। শিখ সম্প্রদায়ের দশম গুরু গুরু গোবিন্দ সিং জি এই তিনদিন ধরে চলা হোলা মহল্লা উৎসব পালন করা শুরু করেছিলেন।

হোলা মহল্লা উৎসব পালন করার পিছনে গুরু গোবিন্দ সিং জির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি সম্প্রদায় তৈরি করা যারা যুদ্ধ করার সঙ্গে স্ব-শৃঙ্খলা এবং আধ্যাত্মিকতাতেও দক্ষ হয়। এককথায় এই উৎসবের উদ্দেশ্য হল সকলকে ঐক্যবদ্ধ করা, সকলের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, বীরত্ব বাড়িয়ে তোলা এবং সকলের মধ্যে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়া। এই কারণে শিখ সম্প্রদায়ের জন্য, এই উৎসবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুরুদ্বারে প্রার্থনা করার মাধ্যমে শুরু হয় হোলা মহল্লা উৎসব। এরপর কীর্তনের মধ্য দিয়ে শোভাযাত্রা করা হয়। এই উৎসবের ঝলক দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসে। এই উৎসবে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

হোলা মহল্লা উৎসবের দ্বিতীয় দিনে, ঐতিহ্যবাহী মার্শাল আর্ট গাটকা দেখায় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এই অনুষ্ঠানে একটি নকল যুদ্ধ দেখানো হয়, যেখানে দুটি দল থাকে, যারা নিজেদের যুদ্ধ শিল্পের অনন্য উপস্থাপনা দেয়। এছাড়াও আয়োজন করা হয় ঘোড়ায় চড়া, কুস্তি, তীরন্দাজের মতো অনেক প্রতিযোগিতা, যা এই উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এই উৎসবের তৃতীয় দিনে, মহান শিখ বীরদের স্মরণ করার পাশাপাশি তাদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এদিন এক অনন্য দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় নিঃস্বার্থ সেবার। এই উৎসবের শেষে প্রতিটি জাতি, ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মানুষকে বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয়।