আগামী ৩১ অগাস্ট বুধবার সারা দেশ জুড়ে পালিত হবে গণেশ চতুর্থী উৎসব। আগে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রে ধুমধাম করে পালিত হলেও এখন গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে গণেশ পুজো। গণেশ চতুর্থী সাধারণত পশ্চিম ও মধ্য ভারতের মহারাষ্ট্র, গুজরাত, উত্তর প্রদেশে খুব বড় করে পালিত হয়।ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশের জন্ম হয়েছিল বলে এদিনটি গণেশ চতুর্থী হিসেবে পালত হয়। কিন্তু এ দিনটি আবার কলঙ্ক চতুর্থী হিসেবে পালিত হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাদ্রপদ শুক্লপক্ষের দিনটি কলঙ্ক চতুর্থী, চৌথ চন্দ্র রূপে পালিত হয়ে আসছে। কথিত আছে গণেশ চতুর্থীর দিনে চন্দ্রের দর্শন করতে নেই। তা না-হলে গণপতি ক্ষুব্ধ হন। কিন্তু কেন চন্দ্র দর্শন করবেন না? জেনে নেওয়া যাক
কলঙ্ক চতুর্থীর মাহাত্ম্য:-
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী গণেশের এক রূপ দেখে চন্দ্র তাঁর উপহাস করেন। গণেশের মোটা পেট ও গজমুখ দেখে চন্দ্র হাসিতে ফেটে পড়েন। চন্দ্রের ব্যবহার গণেশের ভালো লাগে না। তিনি চন্দ্রকে অভিশাপ দেন যে, নিজের রূপের ওপর তাঁর অনেক অহংকার, তাই তিনি নষ্ট হয়ে যাবেন এবং কেউ তাঁর দিকে তাকাবে না। উপরন্তু যে চন্দ্রকে দেখবে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। এই অভিশাপে দুঃখী হয়ে চন্দ্রের কলা দিন-প্রতিদিন কমতে থাকে। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভের জন্য গণেশের কাছ থেকে ক্ষমা চান চন্দ্র। তার পর শিবের পুজো শুরু করে দেন। চন্দ্রের প্রতি শিব প্রসন্ন হন ও তাঁকে রক্ষা করার জন্য নিজের মস্তকে চন্দ্রকে ধারণ করেন।
শিবের পরামর্শে চন্দ্র ফের গণেশের পুজো করেন। চন্দ্রের ওপর প্রসন্ন হয়ে গণেশ বলেন যে তাঁর অভিশাপ সমাপ্ত হবে না, কিন্তু এর প্রভাব কমে যাবে। গণেশ বলেন, এবার থেকে ১৫ দিন চন্দ্র ক্ষয় হবে ও পরের ১৫ দিন পূর্ণ রূপ লাভ করবেন। তাই চন্দ্র ধীরে ধীরে কমতে থাকে। পাশাপাশি চন্দ্রকে গণেশ এ-ও বলেন যে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে যে কেউ চন্দ্র দর্শন করবে, তাঁকে মিথ্যা কলঙ্কের দায়ে ভুগতে হবে। অন্যান্য দিন তাঁকে দেখলে কোনও কলঙ্কে ভুগতে হবে না। এ কারণে গণেশ চতুর্থীর দিনে চন্দ্র দর্শনকে নিষিদ্ধ মনে করা হয়। বিষ্ণু পুরাণে উল্লিখিত এক কাহিনি অনুযায়ী ভাদ্রপদ মাসের চতুর্থী তিথিতে চন্দ্র দর্শন করায় কৃষ্ণকেও মিথ্যা কলঙ্কে ভুগতে হয়েছিল।