রাত পোহালেই কালীপুজো (Kali Puja 2020)। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই কালী পুজো (Kali Puja) করা হয়। দেবী কালীর (Kali) অসংখ্য নামের মধ্যে দক্ষিণ, সিদ্ধ, গুণ্য, ভদ্র, শ্মশান, রক্ষা ও মহাকালী। দেবী কালীর আবির্ভাব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে দেবতা আর অসুরদের যুদ্ধে পরাজিত দেবতাদের প্রার্থনায় আদ্যাশক্তি ভগবতি পার্বতীর দেহ কোষ থেকে দেবী কৌশিকী আবির্ভূত হন। তখন ভগবতী দেবী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন বলে তাঁর নাম কালী বা কালিকা। কথিত আছে বঙ্গদেশে দক্ষিণ কালিকার পুজো প্রবর্তন করেন কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ (Krishnananda Agamavagisha) (আনুমানিক ১৫০০-১৬০০ শতক) মতান্তরে ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে। মা কালী মহাশক্তি। যা ছিল, যা আছে এবং যা থাকবে সব মা কালীর মধ্যেই আছে। অনন্ত, আদি, বর্তমান সব কালী মায়ের মধ্যেই আছে।
দেবী কালী বিভিন্ন রূপে পূজিত হন। দশমহাবিদ্যার প্রথম ও আদি রূপ হল কালী। মা কালীর আবার নানা রূপ-যেমন- দক্ষিণাকালী, শ্মশানকালী, ভদ্রকালী, রক্ষাকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, চামুণ্ডা ইত্যাদি। আদ্যাশক্তি মহামায়ার আবার আটটি রূপ- দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, উগ্রকালী, গুহ্যকালী, ভদ্রকালী, শ্মশানকালী এবং চামুণ্ডাকালী। দেবী করালবদনা, মুক্তকেশী, চতুর্ভুজা, নৃমুণ্ডমালা বিভূষিতা। দুর্গা-চণ্ডী-কালী-একই সত্তায় মহাশক্তি রূপে পরিণত হয়েছেন। প্রচলিত মত ও ইতিহাসবিদদের সমর্থন অনুযায়ী, কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে প্রথম দক্ষিণাকালীর রূপ কল্পনা করেন। বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মা কালীর রূপেই সম্পূর্ণ বাংলা ও তার বাইরে কালীপুজো হয়। বিভিন্ন মন্দিরে ব্রহ্মময়ী, ভবতারিণী, আনন্দময়ী, করুণাময়ী-ইত্যাদি নামে কালীপ্রতিমা প্রতিষ্ঠা ও পুজো করা হয়। আরও পড়ুন-Anubrata Mondal: অনুব্রত মণ্ডলের শক্তির আরাধনা, মা কালীকে পরালেন ৩০০ ভরির স্বর্ণালঙ্কার
ধ্বংসের রূপ তিনি, সৃষ্টিরও। ধ্বংসের মধ্যেই সৃষ্টির বীজ লুকিয়ে আছে। যেমন, রাতের পরে দিন আসে আর কি। তেমনি ধ্বংসের পর সৃষ্টিও হয়। ঘন কালো মেঘ বিদায় হলেই আকাশে ঝলমলিয়ে সূর্য ওঠে। তাই ধ্বংস ছাড়া সৃষ্টির বিকাশ সম্ভব নয়।