পরমা বুটিকের কর্ণধার পরমা ঘোষ (Photo Credits: Facebook)

Durga Puja Special Designed Shari and Blouses: অপেক্ষার আর কয়েকদিন। এরপরই শুরু হয়ে যাবে দেবী দুর্গার আরাধনা। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে কল্লোলিনী কলকাতা সাজছে আলোতে। বাধা বাঁশে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং পড়ে গিয়েছে। সিংহ চেপে সেজেগুজে মা আসছেন তাঁর সন্তানদের নিয়ে। আপনি কতটা তৈরি পুজোর জন্য? অফিস কিংবা সংসারের কাজ, কলেজ কিংবা পড়াশুনার চাপে যদি পুজো শপিংটা না করে থাকেন তবে শীঘ্রই করে নিন। পুজোয় ট্র্যাডিশনাল পরবেন অথচ বুঝতে পারছেন না, কোনটা ইন?

এবছর শাড়ির থেকেও ব্লাউজ অনেক বেশি চর্চার বিষয়। ডিজাইনার ব্লাউজে এবছর বাজার ছেয়ে গেছে। জেনে নিন ডিজাইনার (Designer) পরমা ঘোষ (Parama Ghosh) আপনাকে পুজোতে সাজিয়ে তুলতে কী টিপস দিচ্ছেন। আরও পড়ুন, পুজোয় সেরা রমণী হওয়ার টিপস টলিউড খ্যাত মেকআপ আর্টিস্ট পাপিয়া চন্দের

লেটেস্টলি বাংলা: আপনার ডিজাইনে আলতা পরা পায়ের ছাপ ও ঘুঙুর লাগানো ব্লাউজ। কিছুদিন আগে স্বস্তিকা মুখার্জি (Actress Swastika Mukherjee) পরেছিলেন। তারপর থেকে খুব ট্রেন্ডিং। এই ভাবনাটি কীভাবে এলো?

এটা অ্যাকচুয়ালি আমার লাস্ট ইয়ার ডিসেম্বরের ইন্ডিয়া স্টোরির কালেকশনের মধ্যে ছিল। ওখানে আসা পাওয়ারফুল উইমেন সিরিজের জন্যে আমি এটা ডিজাইন করেছিলাম। পাওয়ারফুল উইমেন বলতে দুর্গাঠাকুর পাশাপাশি আমাদের সাধারণ বাঙালি মেয়েরা যেমন হয় তার মধ্যে ২ রকম ভার্সন আছে। একটা যেটা স্বস্তিকা মুখার্জি পরেছিল মায়ের পায়ের কাছে শিউলি ফুল আছে। মায়ের পা আর শিউলি ফুল দেখলেই মনে হয় ওটা দুর্গা ঠাকুরের পা। যেটা দেখলেই মনে হয় দুর্গাপুজার একটা ফিলিং দেয়। আরেকটা বানিয়েছিলাম পায়ের ছাপ ও ঘুঙুর, যেটা কিনা দেখবে রবিবার বিকেলে বাঙালি মেয়েরা ঘুঙুর পরে নাচের স্কুলে যায়। আমি নিজে ছোটবেলায় যখন ভরতনাট্যম শিখতাম এভাবে ঘুঙুর পরে ক্লাস করতে যেতাম। তো এগুলি সানডে ডান্স ক্লাসেস, সাধারণ বাড়ির মেয়ে ওই মেমোরিটাকে ইনকর্পোরেট করার জন্য। তাই পা একই শুধু ঘুঙরু আর শিউলি ফুল দুটি ডিজাইনকে বদলে দেয় আর কী। ঘুঙুর আর শিউলি ফুল ব্যবহারে বোঝানো হয় একটি সাধারণ মেয়ের পা আরেকটি মায়ের পা।

 

আলতা পায়ে ঘুঙুর

লেটেস্টলি বাংলা: মায়ের পায়ের ছবি বা আলতা পায়ে ঘুঙুর। এগুলি এবার পুজোয় কতটা আকর্ষণীয়?

আমার তো এই দুটি ডিজাইন ওয়ান অফ দ্য মোস্ট সোল্ড।

লেটেস্টলি বাংলা: এছাড়া আর কী বানিয়েছেন যা এবছর বেশি ক্রেতারা চাইছেন?

সত্যজিৎ রায়ের ছবি 'দেবী'- র আমার কাছে দুটো ভার্সন রয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের আঁকা পোস্টার একটা ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছিল, আরেকটি কোনোদিন হয়নি। কিন্তু সত্যজিৎ নিজে এঁকেছিলেন দেবীর পোস্টার সেটা আমি এবছর পুজোর জন্য করেছি যেটা খুব ভালো বিক্রি হয়েছে। আরেকটা আমি ৩ বছর আগে করেছিলাম যেটা রাজ্যশুদ্ধু কপি হয়েছে। আমি নিজেই দেখে ঘাবড়ে যাই যে এরকম কপি কীকরে হয়েছে। কিন্তু যেটা আমি করেছিলাম সেটা দেবীর আসল পোস্টারটা। যেখানে শর্মিলা ঠাকুরের মুখ। সত্যজিৎ রায় বানিয়েছিলেন। ঠাকুর গড়া হচ্ছে এমন একটা ছবি, যেটা জয় বাবা ফেলুনাথ থেকে ইনস্পিরেশন (জয় বাবা ফেলুনাথের দৃশ্যের বর্ণনা দিয়ে)। ঠাকুর বানানোর ওই হাফ স্টেজের দৃশ্যের ডিজাইনটাও প্রচুর বিক্রি হয়েছে। যেটাকে ঠাকুর গড়া ব্লাউজ বলে এছাড়াও বাজলো তোমার আলোর বেণু ব্লাউজ, রেডিও (মহালয়া ব্লাউজ) প্রচুর বিক্রি হয়েছে।

 

লেটেস্টলি বাংলা: এগুলোর দাম কীরকম?

এগুলির শুরু ধরুন ২, ০০০। আর এগুলি ২, ০০০- ২, ৪০০। বেশির ভাগই হ্যান্ড এম্ব্রইডার্স এবং জামদানি কাপড়ের। সব সাইজেরই রয়েছে।

লেটেস্টলি বাংলা: এটাকি রেডিমেড ব্লাউজ নাকি আপনাকে আগে থেকে অর্ডার দিতে হয়?

পুজোর আগে এখন কাস্টোমাইজেশন বন্ধ রেখেছি। এখন যা রয়েছে সব রেডিমেড।

লেটেস্টলি বাংলা: আপনি এই ব্লাউজগুলো পড়ার জন্য কীধরণের শাড়ি সাজেস্ট করবেন?

দেখুন, আমি যে ব্লাউজগুলোর কথা বললাম সেগুলোর নিজস্ব আমারই ডিজাইন করা ম্যাচিং শাড়ি রয়েছে। একই কাজ করা শাড়ি। শাড়িগুলো ৪, ৭০০ থেকে ১০, ০০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। খাদি কটন হলে ৫, ০০০ ধরুন। জামদানির ওপর হলে ৬,০০০- ৬, ৫০০। গরদের ওপর হলে ধরুন ১০, ০০০।

লেটেস্টলি বাংলা: আপনার ডিজাইনে স্বস্তিকা মুখার্জিকে কেন যুক্ত করলেন?

আর কাউকে আমি চিনি না তাই। স্বস্তিকা আমার বন্ধু বলে। আমার ম্যাক্সিমাম মডেল হচ্ছেন আমার ক্লায়েন্ট। তারা আমার ডিজাইন তারাই পরে ছবি তুলে পাঠান। আমার বন্ধু বান্ধবরা ও ক্লায়েন্টরাই ছবি দেন। আমি আজ অব্দি মডেল বা সেলিব্রিটি দিয়ে শুট করাইনি। আমার মনে হয় রিয়েল ওমেন পরে থাকাটা বেশি জরুরি। স্বস্তিকা একেবারেই জিরো ফিগার নয়। সাধারণ মানুষের মতো ফিগার। তাই মানুষ অনেক বেশি রিলেট করতে পারে। স্বস্তিকা তাই খুব ভালো ফিট করে।

লেটেস্টলি বাংলা: ডিজাইনগুলোকি সব আপনারই ভাবনা?

হ্যাঁ, সব আমারই ভাবনা। শুধু ইলাস্ট্রেশনগুলো কখনও কখনও আর্টিস্ট দিয়ে করাই। কিন্তু আইডিয়াটা আমার।

 

পরমা ঘোষের 'পরমা বুটিক'- র সমস্ত কালেকশন পেয়ে যেতে পারেন তাঁর ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক প্রোফাইল পেজ থেকে। সেখানে গিয়ে অর্ডার করে নিতে পারেন আপনার পছন্দের শাড়ি বা ব্লাউজ। পুজোর আগের আর কয়েকটাদিন জমিয়ে শপিঙ করুন। আর থাকুন ফ্যাশনে ইন।