একটি গণতান্ত্রিক জাতির জন্য, দেশের নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারণ করে সংবিধান। এটি সরকারের বিভিন্ন ধরনের অধিকার ও কর্তব্যও সংজ্ঞায়িত করে। সংবিধান হল কোনও দেশের শাসন ব্যবস্থা ও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তৈরি একটি দলিল। সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে স্বাধীনতার পর সংবিধান গ্রহণ করে ভারতও। সংবিধান প্রণয়নের জন্য অনেক দেশের সংবিধান অধ্যয়ন করা হয় এবং সেগুলো থেকে ভালো বিধি ও আইন বের করে ভারতের সংবিধান প্রণীত হয়। প্রতি বছর ২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস পালন করা হয় ভারতে। ভারতীয় সংবিধান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা ও সংবিধানের গুরুত্ব এবং আম্বেদকরের ধারণাগুলি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতি বছর পালন করা হয় এই দিনটি।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একটি সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। সংবিধান প্রণয়নে সময় লাগে ২ বছর ১১ মাস ১৮ দিন। ১৯৪৯ সালের ২৬ জানুয়ারী প্রস্তুত হয় ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সংবিধান। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারী বাস্তবায়িত হয়, প্রতি বছর এই দিনে পালন করা হয় প্রজাতন্ত্র দিবস। সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একজন সিনিয়র সদস্য ডঃ স্যার হরিসিং গৌড়ের জন্মদিন ২৬ নভেম্বর দিনটিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হয় সংবিধান। ২০১৫ সালে প্রথমবার পালন করা হয় সংবিধান দিবস এবং তারপর থেকে প্রতি বছর ২৬ নভেম্বর পালন করা হয় সংবিধান দিবস।

২০১৫ সালে সংবিধান দিবস উদযাপন শুরু করার একটি কারণ ছিল সংবিধানের স্রষ্টা ডক্টর ভীমরাও আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। আম্বেদকরকে শ্রদ্ধা জানাতে এই বছর সংবিধান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সামাজিক বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়। এই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য হল সংবিধানের গুরুত্ব এবং ডক্টর ভীমরাও আম্বেদকরের চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেওয়া। ভারতীয় সংবিধান তৈরির কৃতিত্ব দেওয়া হয় ডঃ ভীমরাও আম্বেদকরকে। বাবা সাহেব গণপরিষদের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তাঁকে ভারতীয় সংবিধানের জনকও বলা হয়। ভারতের সংবিধান বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। এতে ৪৪৮টি নিবন্ধ, ১২টি সময়সূচী এবং ২৫টি অংশ রয়েছে। মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি মৌলিক কর্তব্যের কথাও বলা রয়েছে ভারতীয় সংবিধানে।