নয়াদিল্লি: ভারত ও পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিভক্ত হয়। ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। দেশভাগের ফলে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতা এবং নিজস্ব জাতীয় পরিচয় গঠনের সুযোগ পেলেও, এই লাভের মূল্য ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক। মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi) ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস (Independence Day) উদযাপনে অংশগ্রহণ করেননি কারণ তিনি সেই সময় দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং বিভাজনের ফলে সৃষ্ট মানবিক সংকট নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। ভারত ও পাকিস্তানের বিভাজনের পর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং বাংলায় ব্যাপক হত্যা, স্থানান্তর এবং শরণার্থী সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মহাত্মা গান্ধী দেশভাগের সময় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উপবাস এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সত্যিকারের স্বাধীনতা তখনই আসবে যখন দেশের মানুষ একত্রে শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করবে। এই কারণে তিনি আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা দিবসের উৎসবে যোগ না দিয়ে মানুষের মধ্যে ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে মনোনিবেশ করেন। আরও পড়ুন: CM Mamata On Women Empowerment: সমাজের উন্নয়নের জন্য দরকার মেয়েদের ক্ষমতায়ন, কন্যাশ্রী দিবসে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
গান্ধী অখণ্ড ভারতের পক্ষে ছিলেন, যেখানে হিন্দু, মুসলিম, শিখ এবং অন্যান্য সম্প্রদায় একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ভারতের স্বাধীনতা তখনই পূর্ণতা পাবে যখন দেশের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি থাকবে। ১৯৪৭ সালে যখন মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভাজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়, তখন গান্ধী এটিকে ‘আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে বিভাজন দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ ও সহিংসতা বাড়াবে। মনেপ্রাণে মেনে না নিলেও বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি বিভাজন মেনে নিতে সম্মত হন।