দিল্লি, ৩ অক্টোবর: গুরু নানকের জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কর্তারপুরে যাচ্ছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। পাঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, “মনমোহন সিং আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।” এদিন অমরিন্দর সিং নিজে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী কোবিন্দকেও। নরেন্দ্র মোদি, (Prime Minister Narendra Modi) রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ram Nath Kovind) ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের (Manmohan Singh) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের করতারপুর করিডর উদ্বোধনে আমন্ত্রণও জানান। সমস্ত রাজনৈতিক দলের সদস্যদের নিয়ে গঠিত প্রতিনিধি করতারপুরে যাবে। তার অংশ হিসেবেই যাবেন ইউপিএ-১ ও ২ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। সাহিব (Kartarpur Sahib) গুরুদ্বারের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদও এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকেও।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গা গ্রামে জন্ম মনমোহনের। দেশভাগের পর ভারতে চলে এসেছিল তাঁর পরিবার। দশ বছর প্রশানমন্ত্রী থাকার সময়েও পাক সফরে যাননি মনমোহন। ২০০৮-এ মুম্বই হামলার পর পাক সফরে যাওয়ার তাঁর আর কোনও অবকাশ ছিল না বলেও মনে করেন অনেকে। তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, কাশ্মীর ইস্যুতে যখন ভারত-পাক কূটনৈতিক উত্তেজনা চলছে, তখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, কর্তারপুর করিডর উদ্বোধনের জন্য মনমোহন সিং পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত পাঞ্জাবে যাচ্ছেন না। করিডর উদ্বোধনের কোনও প্রশ্নই নেই। সেটা একেবারে আলাদা বিষয়। তিনি যাচ্ছেন, নানকের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে যে অনুষ্ঠান হচ্ছে, তাতে যোগ দিতে। আরও পড়ুন-জামিন পেলেন না চিদম্বরম, ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেলে থাকলেও মিলবে বাড়ির খাবার
তাই মনমোহন সিং যে ইমরান খান সরকারের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তার কোনও রদবদল হচ্ছে না। গুরু নানকের জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সীমান্ত পেরিয়ে করতারপুর যেতে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের কোনও ভিসা লাগবে না। শুধু পুণ্যার্থীরা করতারপুর সাহিবে যাওয়ার অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখলেই হবে। ভারত সীমান্ত থেকে করতারপুর গুরুদ্বার দরবার সাহিব পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করেছে পাকিস্তান। একইভাবে পাঞ্জাবের ডেরাবাবা নানক (Dera Baba Nanak shrine) থেকে সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করেছে ভারত সরকার। উৎসবের প্রতিটি দিন সীমান্ত দিয়ে করতারপুর গুরুদ্বারে যেতে পারবেন ৫০০০ ভারতীয় পুণ্যার্থী। এই মর্মে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে। ২০১৮-র ২৮ নভেম্বর করতারপুর করিডরের শিলান্যাস করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই সময় ভারতের তরফে শিলান্যাস করেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। ভারতের ডেরাবাবা নানক থেকে পাকিস্তানের করতারপুর সাহিবের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার।