পাটনা, ১০ জুন: কেরালায় অন্তঃসত্ত্বা হাতির মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশ তোলপাড় হয়েছিল। এখনও তার রেশ অব্যাহত। এর মধ্যেই হাতিকে (elephant) কেন্দ্র করে অভিনব খবর মিলল বিহারে। সেখানকার এক পশুপ্রেমী প্রৌঢ় তাঁর সমস্ত সম্পত্তি পোষ্য দুই হাতিকেই দিলেন। এই দুই হাতির একটি একবার তাঁকে ক্রিমিনালের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। বছর ৫০-এর ওই ব্যক্তির নাম মহম্মদ আখতার। তিনি পাটনার কাছেফুলওয়ারি শরিফের জানিপুরের বাসিন্দা। পারিবারিক সূত্রেই তাঁর দুটি হাতি রয়েছে। একজনের নাম মোতি। তার বয়স ২০ বছর।আর একজনের নাম রানি, তার বয়স ১৫ বছর। দুজনই মহম্মদ আখতারের সঙ্গে থাকে।
এদিকে কালে কালে ভদ্রলোকের বয়স বেড়েছে। মোতি ও রানি এখন ছোট। এদের বাবা-মা-ও আখাতারের পূর্বপুরুষের কাছে বেড়ে উঠেছিল। একেবারে পরম্পরা মেনেই হাতিরা এই পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি বলেন, এরা দুজনই আমার পরিবারয যদি কোনও সহৃদয় পশুপ্রেমী মোতি ও রানির দেখভালের দায়িত্ব নেয়। আমি চলে যাওয়ার পর যাতে তাদের না খেয়ে মরতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি ওই ব্যক্তিকে দিয়ে যাবেন তিনি। মহম্মদ আখতার হলেন এশিয়ান এলিফ্যান্ট রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ এনিম্যাল ট্রাস্টের প্রধান। এটি একটি এনজিও। একবার মোতি কীভাবে তাঁর জীবন বাঁচিয়ে ছিল, কথা প্রসঙ্গে তাও জানান মহম্মদ আখতার। আরও পড়ুন- Johns Hopkins University: করোনা আক্রান্তের সংখ্যার সন্দেহজনক হিসেব, ভারতকে পচা আপেল বললেন জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক
“ভোজপুরের শাহপুর এলাকায় মাহুতের সঙ্গে গিয়ে মোতি একবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়েই মোতিকে সুস্থ করতে সেখানে চলে যান মহম্মদ আখতার। একদিন যখন সেখানে আমি ঘুমিয়ে আছি। সেসময় মোতির আর্তনাদে আচমকাই জেগে যাই। দেখি একজন জানলার বাইরেই বন্দুক তাক করে বসে আছে, নিশানায় আমি। সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাই।” তাঁর অভিযোগ, পরিবারের সদস্যরা পশু চোরাচালানকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছে বেশ কয়েকবার। প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছেন। মহম্মদ আখতারকে খুন করতে পারলেই হাতিদুটির মালিকানা তাদের হাতে চলে যাবে। এনিয়ে পাটনার পুলিশ প্রধানকে অভিযোগ জানিয়েছেন মহম্মদ আখতার। তবে কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁর আশঙ্কা সরকার যদি এই বিষয়ে দৃষ্টি না দেয় তাহলে তেমন দিন আর দূরে নেই যখন হাতি শুধু বইয়ের পাতাতেই ছবি হয়ে থাকবে।