Jyoti Malhotra (Photo Credit: X)

দিল্লি, ২০ মে: জ্যোতি মালহোত্রাকে (Jyoti Malhotra) জেরা করছে এনআইএ (NIA), আইবি (IB)। পাকিস্তানি গুপ্তচর (Pakistani Spy) জ্যোতি মালহোত্রা ভারতের কোন কোন খবর পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে, সে বিষয়ে তাকে জেরা করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তরফে। জ্যোতি মালহোত্রা যে ৮টি দেশে গিয়েছে ট্রাভেল ভ্লগ তৈরির জন্য, তার মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান (Pakistan) এবং চিন (China)। তার ঘোরাকর তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ এবং দুবাইও। অর্থাৎ পাকিস্তান, চিন, বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং দুবাইতে (Dubai) গিয়ে জ্যোতি কার কার সঙ্গে দেখা করেছে, কোন ধরনের তথ্য শত্রুদের হাতে তুলে দিয়েছে, সেই সমস্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা জেরা করছেন।

পাকিস্তানের হাতে ভারতের একাধিক তথ্য তুলে দেওয়ার অভিযোগে গত কয়েকদিনে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ থেকে এই পাক গুপ্তচরদের গ্রেফতার করা হয়। যাদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের যখের ধন জ্যোতি মালহোত্রা। ট্রাভেল ভ্লগ তৈরির নামে জ্যোতির একাধিকবার পাকিস্তানে যাওয়া, দিল্লির পাক হাইকমিশনে গিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে দহরম মহরম সম্পর্ক, মারিয়ম নওয়াজ় শরিফের পাশে দাঁড়িয়ে ভ্লগ তৈরি, সবকিছু নিয়েই শুরু হয়েছে তদন্ত।

আরও পড়ুন: Jyoti Malhotra: 'দিল্লিতে যাচ্ছি বলত, পাকিস্তানে যাওয়ার কথা কখনও আমায় বলেনি', পাকিস্তানি গুপ্তচর জ্যোতি মালহোত্রার বাবা পালটি খেলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই

জানা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে জ্যোতি মালহোত্রা পাসপোর্ট তৈরি করে। যার ভ্যালিডিটি ২০২৮ সাল পর্যন্ত। পাসপোর্ট তৈরির পর জ্যোতির ট্রাভেল ভ্লগ তৈরির নামে পাকিস্তানে যাতায়াত শুরু করে। পহেলগামে হামলার আগে জ্যোতি মালহোত্রাকে চিনেও যেতে দেখা যায়। এসবের পাশাপাশি দুবাই, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান-সহ একাধিক দেশে যাতায়াত শুরু করে জ্যোতি। এসেবর মধ্যে এই পাক গুপ্তচর চিন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং দুবাইতে গিয়ে কী করে, কার কার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, সে সব বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে খবর।

১৬ মে জ্যোতির গ্রেফতারির পর ১৭ মে হিসারের পুলিশ সুপার জানান, পাক গুপ্তচর সংস্থা জ্যোতিকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয় যাতে সে ক্রমাগত সে দেশের 'যখের ধন' হয়ে ওঠে। পরপর পাকিস্তানে যায় জ্যোতি. এমনকী ২২ এপ্রিল পহেলগামে হামলার আগেও জ্যোতি মালহোত্রাকে পাকিস্তানে যেতে দেখা যায় বলে জানা যায়।

এসেবর পাশাপাশি পাক হাইকমিশনের অফিসার এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে জ্যোতি মালহোত্রার ওঠাবসা ছিল। এই দানিশই আল আওহান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে জ্যোতির পরিচয় করিয়ে দেন। আলি আওহানই জ্যোতির পাক ভিসা তৈরি করে দেন। জ্যোতি কোথায় গিয়ে থাকবে পাকিস্তানে, তার সবটাই পরিকল্পনা করে দেন আল আওহান। এরপর রানা শেহবাজ় এবং শাকির নামে পাক গোয়েন্দা সংস্থার দুই আধিকারিকের সঙ্গে জ্যোতির পরিচয় হয় সেখানকার হাই প্রোফাইল পার্টিতে। শাকিরের নাম জ্যোতির ফোনে সেভ করে দেওয়া হয় জাট রনধাওয়া নামে।

পাকিস্তান থেকে ফেরার পর জ্যোতি মালহোত্রা পাক আধিকারিকদের সঙ্গে স্ন্যাপ চ্যাট, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যেম ক্রমাগত যোগাযোগ করে। পাশাপাশি পাক হাই কমিশনে গিয়ে দানিশের সঙ্গে কতাবার্তাও তার বেড়ে যায়। এরপর হরিয়ানা, পাঞ্জাব জুড়ে জ্যোতি পাকস্তানের গুপ্তচরবৃত্তি করতে শুরু করে। একাধিক হ্যান্ডেলারও খুঁজে নেয় বলে তদন্ত উঠে এসেছে।

ফলে জ্যোতি কোথায় কোন জাল বিছিয়ে রেখেছে, তার গাঁট খুলতে চাইছেন গোয়েন্দারা। ফলে জ্যোতি মালহোত্রাকে এক নাগাড়ে জেরা করা হচ্ছে বলে খবর।