মুজাফ্ফরনগর, ২৩ সেপ্টেম্বর: কন্যাদিবসের দিনই দুই শিশুকন্যাকে ছুঁড়ে পুকুরে ফেললেন তাদের মা। দুই একরত্তির বয়স মাত্র ২০ দিন। স্বামীর সঙ্গে বচসার জেরেই রেগে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন গৃহবধূ। ওই দম্পতিকে ইতমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে। জেলার পুলিশ প্রধান অভিষেক যাদব জানিয়েছেন, ওই গৃহবধূর নাম নাজমা। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলও পরে জানান, মেয়েরা বেঁচে থাকলে তো তাদের প্রতিপালন করতে হত। সেই টাকা কোথায় পেতাম। তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার সংস্থানও তো নেই। স্বামী ওয়াসিম দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন, বার বার কাজের খোঁজ করলেও কিছু মেলেনি, যাতে সংসারে দুটি পয়সা আসে।
উল্লেখ্য, এত বড় ঘটনা ঘটিয়েও বুক কাঁপেনি নাজমার। বরং পুলিশের কাছে গিয়ে দুই শিশুকন্যার অপহরণের অভিযোগ লেখান তিনি। নিজেরা যে মেয়েদের মেরে ফেলেছেন তা বলতে বেশ দ্বিধায় ছিলেন দুজনেই। পড়শিরাও এই অপহরণের খবরে আতহ্কিত হয়ে পড়েন। কে কেন এই কাণ্ড ঘটালো তাই নিয়ে পাড়ায় শুরু হয়ে যায় গুঞ্জন। সবারই প্রায় জানা ছিল নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসার নাজমার, আর সেখানেই কি না অপহরণের ঘটনা ঘটল। এদিকে ২০ দিনের যমজ শিশু কন্যাদের অপহরণের খবরে তদন্তে নামে পুলিশ। নাজমা ও ওয়াশিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের বক্তব্যের মধ্যে অসঙ্গতি থাকতেই দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে ম্যারাথন জেরা শুরু করে পুলিশ। তাতেই একসময় ভেঙে পড়ে সত্যিটা জানিয়ে দেয় ওই দম্পতি। আরও পড়ুন-যুব কংগ্রেস নেতার গুলিতে আহত কিশোর, কর্ণাটকে চাঞ্চল্য
এরপরেই পাড়ার পুকুরে দুটি দেহ ভেসে ওঠে। পুলিশ দেহদুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। নিজের সন্তানকে খুনের অভিযোগে ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় মনসুরপুর শহরে ওয়াশিমের বাড়ি। তবে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী নাজমার গ্রামেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল ওই দম্পতি। দুই মেয়ের জন্মের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। পাড়ার লোকদের তা অজানা ছিল না, কিন্তু সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে দুধের শিশুদের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলবে মা এটা কেউ ভাবতেই পারছেন না।