জামনগর, ৬ আগস্ট: কয়েকমাসের আলাপে মার্কিনি বান্ধবীর প্রতারণার শিকার জামনগরের যুবক। উপহার দেওয়ার নাম করে যুবকের কাছ থেকে ১৪.৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল মার্কিন অভিনেত্রীর ছদ্ম পরিচয়ধারী সোফিয়া ভার্গারা। প্রতারিত যুবকের নাম আশিসা সাকারিয়া। বছর ৩০-এর ওই যুবক আইটি কর্মী। তিনি গুজরাটের জামনগরের (Jamnagar) বাসিন্দা। বেশ কয়েকমাস আগে তাঁর সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে মার্কিন মহিলার পরিচয় হয়। পরিচয় পর্বের শুরুতেই নিজেকে আমেরিকান অভিনেত্রী বলেছিলেন ওই মহিলা। নাম সোফিয়া। অল্প স্বল্প আলাপ কিছুদিনেই জমে ওঠে। সম্পর্ক বন্ধুত্বে গড়াতে না গড়াতেই নিজের বিগলিত যুবক বিদেশি বান্ধবী পেয়ে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে দেন। বান্ধবী যে তাঁকে ঠকাতে এসেছে তা ঘুণাক্ষরের বুঝতে পারেননি আশিস।
এর মধ্যেই একদিন সোফিয়া হোয়াটসঅ্যাপে তাঁকে জানায় ৪০ হাজার ডলারের একটা উপহার কিনেছে সে। আশিসের জন্য উপহারটি জামনগরে পাঠাবে। তবে বিদেশ থেকে যেহেতু আসছে তাই শুল্ক দপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য যুবককে বেশকিছু টাকা খরচ করতে হবে। মার্কিন অভিনেত্রী একে বান্ধবী হয়েছে। তারপর আবার তাঁর জন্য উপহার কিনে পাঠাচ্ছে। খুশিতে বিগলিত আশিস কথার মারপ্যাঁচ বুঝতে পারলেন না। টাকা দিতে রাজি হয়ে গেলেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কাস্টমস অফিসের নাম করে একটি ফোন এলে জনৈক দীণেশ শর্মার অ্যাকাউন্টে ৩৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন আশিস সাকারিয়া। এরপর ফের কাস্টমস অফিস থেকে ফোন আসে। বলা হয়, স্ক্যানারে দেখা যাচ্ছে পার্সেলে ৪০ হাজার ডলারেরও বেশি মূল্যের উপহার রয়েছে। তাই আশিসকে অতিরিক্ত ১২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। কোনওরকম প্রশ্ন না করেই সেই টাকা দিয়ে দেন যুবক। এরপর ফের ফোন করে বলা হয় কাস্টমসের ছাড়পত্র মিলেছে তবে ভারত সরকারকে উপহারের মূল্য স্বরূপ কর দিতে হবে ২.৪৫ লাখ টাকা। এমনকী আয়কর দপ্তরের একটি বিলও তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। এটা দেখে আর সন্দেহ করেননি ওই যুবক। তবে ফের ৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা চেয়ে ফোন এলে সোজাসুজি বান্ধবীকে বিষয়টি জানান আশিস সাকারিয়া। বান্ধবীর কথায় সেই টাকাটাও দিয়ে দেন তিনি। আরও পড়ুন- BJP Sarpanch Shot Dead: উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বিজেপির গ্রাম প্রধান সাজ্জাদ আহমেদ খাণ্ডে
এরপরও জানা যায় আমেরিকান ডলারের উপহার তাই দিল্লি হাইকোর্টের শংসাপত্র লাগবে। নাহলে উপহার পাবেন না। সেজন্য ১০.৩৬ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তৎক্ষণাৎ ৫ লাখ টাকা জমা করার পর বাকি টাকা দিতে অস্বীকার করেন ওই যুবক। বরং সোফিয়াকে ভারতে আসতে বলেন। ততক্ষণে ভালমতো বুঝে গিয়েছেন যে প্রতারিত হচ্ছেন। দেড় মাসের মধ্যে ১৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ছটি ব্যাংকে তিনি জমা করেছেন। এরপর থানায় প্রতারণা অভিযোগ দায়ের করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯, ৪২০, ১২০ ও ১২০-র বি ধারায় মামলা রুজু হয়। তথ্য প্রযুক্তি আইনেও মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। গোটা ঘটনায় বোকা বনে গেছেন আশিস সাকারিয়া।