নতুন দিল্লি, ২৮ মে: তীব্র দাবদাহ, খিদে আর ডিহাইড্রেশনের কারণে সোমবার থেকে আজ পর্যন্ত বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনের মধ্যেই ৯ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ গেল। মৃতদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন। বিহার স্টেশনের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে শিশুপুত্র মৃত মাকে বার বার জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। ওই মৃত মহিলা একজন পরিযায়ী শ্রমিক। যিনি বাচ্চাকে নিয়ে ট্রেনে চেপে রাজ্যে ফিরছিলেন। নিয়তির খেলায় প্রাণ নিয়ে ফেরা হল না তাঁর। ১মে থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফেরাতে ট্রেন (Shramik Special trains) চালাচ্ছে ভারতীয় রেল। এর আগেও বেশ কয়েকটি ননএসি ট্রেন কয়েকটি মৃত্যুর খবর নথিভুক্ত হয়েছে। বুধবার এই প্রসঙ্গে রেল তার বিবৃতিতে জানায় ট্রেনে মৃত শ্রমিকরা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।
সোমবার থেকেই উত্তরপ্রদেশ ও বিহারগামী ট্রেনের শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর এসেছে। যদিও দুই রাজ্য ও রেলের তরফে মৃত্যুর খতিয়ান এল বুধবার। আরজেটি নেতা তেজস্বী যাদবের সহযোগী সঞ্জয় যাদব, বিহার রেল স্টেশনের মৃত শ্রমিক মায়ের শিশুপুত্রের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেই তা বাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, নিথর মাকে বার বার জাগানোর চেষ্টা করছে ওই খুদে। ভাঁজকরা কম্বল ফেলছে তার গায়ে। নিরন্তর চেষ্টার পরেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে নিজেই কম্বলে মাথা ঢাকছে। মুজাফ্ফরপুর রেলস্টেশনে একের পর এক ট্রেন আসাযাওয়ার ঘোষণা হচ্ছে। তার মধ্যেই পড়ে আছে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ। শিশুপুত্র মাকে জাগানোর চেষ্টা করেই চলেছে।
জানা গিয়েছে, মৃত শ্রমিকের নাম উরেশ খাতুন(৩৫)। একটা মৃত্যু যখন অনেক প্রশ্ন তুলছে ঠিক তখনই লকডাউনে বেকার হয়ে পড়া হাজারও শ্রমিক ট্রেনে চড়ে বিহারে ফিরছে। টুইটে সঞ্জয় যাদব লিখেছেন, “যে বিছানার চাদরে শিশুটি খেলে চলেছে সেটা যে তার মৃত মায়ের কাফনে পরিণত হয়েছে, তা সে বুঝতে পারছে না। চারদিন ধরে টানা ট্রেনযাত্রায় মেলেনি খাবার, পানীয়জল, তারউপরে অসহ্য গরম। ট্রেনের মধ্যে এমন অসহায় মৃ্ত্যুর দায়ভার কার? বিরোধীদের নিশ্চয় এমন অস্বস্তিকর প্রশ্ন তোলা উচিত নয়?” আরও পড়ুন-Coronavirus Cases In India: বৃহস্পতিবার দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখের উপরে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ৬,৫৬৬
এই প্রসঙ্গে মুজাফ্ফরপুর রেল স্টেশনের জিআরপি ডিওয়াই এসপি রামকান্ত উপাধ্যায় বলেছেন, মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ২৫ মে। যখন শিশুকে নিয়ে ওই পরিযায়ী শ্রমিক আমেদাবাদ থেকে ট্রেনে বিহারে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভগ্নীপতি ও বোন। ক্ষুধা তৃষ্ণার কবলে মধুবনী স্টেশনেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। যদিও রেলের দাবি, মৃত মহিলা আসলে হৃদরোগে ভুগছিলেন। বেশকিছু আগে তার অস্ত্রোপচারও হয়। মুজাফ্ফরপুরে এক পরিযায়ী শ্রমিকের সাড়ে চার বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে।