অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি পুলিশের, অপমানে থানার সামনেই গায়ে আগুন দিল দম্পতি
প্রতীকী ছবি(Photo Credit: PTI)

আগ্রা, ২৮ আগস্ট: স্থানীয় মাসল ম্যানের অত্যাচারে দৈনন্দিন জীবন অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। স্বস্তির আশায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি। উল্টে অভিযুক্ত মাসল ম্যানকেই আড়াল করার চেষ্টা করছিলেন থানার বড়কর্তা। এহেন ঘটনায় সমগ্র আইন ব্যবস্থার উপর থেকে ওই দম্পতির ভরসা উঠে যায়। তবে নিজেরা টিকে থাকলেও পুলিশ যে অপরাধকে চাপা দিতে আরও বড় অপরাধ করছে, এটা মানতে পারছিলেন না দম্পতি। তাই এই ঘটনার প্রতিবাদে থানার সামনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন। বাবা-মায়ের এহেন কর্মকাণ্ডকে মোবাইল বন্দি করতে সময় নেয়নি কিশোর ছেলে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল শুরু হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মথুরার সুরির থানার (Sureer police station in Mathura) সামনে।

জানা গিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ দম্পতি ওই এলাকার বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন ধরেই স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি তাঁদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করছিল। বাধ্য হয়েই থানার বড়কর্তা দীপক নাগরকে তাঁরা বিষয়টি জানান। অভিযোগও দায়ের করেন। তবে তার পরেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এদিকে থানায় অভিযোগ জানানোর অপরাধে অভিযুক্ত আরও বেশি করে তাঁদের উত্ত্যক্ত করতে শুরু করলে ফের থানায় যান যোগেন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী। তবে লাভ কিছু হয়নি। এদিনের ঘটনার পর ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জানা গিয়েছে, এলাকায় সত্যপাল (Satyapal)নামেই পরিচিত ওই অভিযুক্ত। অভিযোগ, থানার কর্তা দীপক নাগরের (Deepak Nagar) সঙ্গে সত্যপালের দারুণ দহরম মহরম রয়েছে। সত্যপাল এলাকায় গুন্ডাগিরি করবে অথচ দেখেও দেখবে না পুলিশ। বিনিময় থানায় মাসে মাসে পৌঁছাবে মোটা অঙ্কের ইনাম। এই ভাবেই রফা হয়েছে সবকিছু। তাইতো যোগেন্দ্র (Jugendra) দায়ের করা অভিযোগের কোনও সুবিচার মেলেনি। আরও পড়ুন-গাছের পাতা ছেঁড়ার অপরাধে দশম শ্রেণির ছাত্রকে বেধড়ক মারধর, আইসিউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আক্রান্ত

এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হতেই পুলিশের দুর্নীতির সমালোচনায় মুখর হয়েছে গোটা দেশ। তড়িঘড়ি দীপক নাগরকে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন আগ্রা জোনের এডিজি অজয় আনন্দ (Ajay Anand)। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তকে খুব শিগগির গ্রেপ্তার করার কথাও বলেছেন এডিজি। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা এই ঘটনার নিন্দে করে দোষীদের যথাযথ শাস্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। এদিন সকালেই থানার সামনে নিজেদের গায়ে আগুন লাগান ওই দম্পতি। পুলিশকর্মীরা তা দেখতে পেয়েই সাহায্যের জন্য ছুটে যান। একজন আগুন নেভাতে কম্বল চাপা দেন। আর একজন অগ্নিদগ্ধ দম্পতিকে কম্বলে জড়িয়ে প্রাণ বাঁচান। তারপর তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় দুজনকে। গোটা ভিডিওতে একটি বাচ্চার কান্না শোনা যাচ্ছে। এই কিশোর অগ্নিদগ্ধ দম্পতির ছেলে।