
নাগপুর, ২১ ফেব্রুয়ারি: রান্না করতে অস্বীকার করায় স্ত্রী সহ দুই সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দিলেন এক ব্যক্তি। এমনকী তাঁদের ঘরবন্দী করে রেখেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, নাগপুরের (Nagpur) ওম নগরের জগনাদে চকের এক অ্যাপার্টমেন্টে পরিবার নিয়ে থাকেন ৪৬-এর রঞ্জন সাহু। মঙ্গলবার স্ত্রীর সঙ্গে রান্না নিয়ে বচসা হলে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়। তখন একটি দেশলাই বাক্স নিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার (Domestic LPG Cylinder) খুলে ঘর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় ওই ব্যক্তি। প্রতিবেশীরা বাধা দিলেও তাঁকে আটকানো সম্ভব হচ্ছিল না, তাই আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ আসলেও পরিস্থিতি আরও লাগাম ছাড়িয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মানসিকভাবে অসুস্থ রঞ্জন সাহু পেশায় রেলওয়ে সমবায় ব্যাঙ্কের (Railway Cooperative Bank) হেড ক্লার্ক। জানা যাচ্ছে, মাঝেমধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝামেলা হত। এদিন বচসা চলাকালিন হঠাৎই রান্নার গ্যাসের পাইপ রেগুলেটার থেকে খুলে ফেলে। তারপরেই দেশলাইয়ের বাক্স নিয়ে ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ওই আবাসনে রঞ্জনের পরিবার ছাড়াও আরও ৪০-৫০টি পরিবার থাকে। এমনকী রঞ্জন ও মীনুর ১৪ ও ৮ বছরের দুটি সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ, তাঁদের ঘরবন্দী করে রেখে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ওই ব্যক্তি।
কিন্তু সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটলে আবাসনের বাকি পরিবারের জীবনের ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই তাঁরা তড়িঘড়ি কোরাডি থানায় (Koradi Police) খবর দেয়। পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁরা ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে ঘটনাস্থলে আগে থেকেই ছুটে আসে দমকল বাহিনী। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় রঞ্জনের এক বয়স্ক প্রতিবেশী তাঁকে বোঝানোর জন্য এগিয়ে আসে। কিন্তু তাঁকেও ধরে ঘরবন্দী করে নেয় ওই ব্যক্তি। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই বয়স্ক প্রতিবেশীর মেয়ে বাবাকে ছাড়ানোর আর্জি জানায়। কিন্তু রঞ্জন সেকথায় কর্ণপাত করেন না। শেষে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় আটকে থাকা ব্যক্তিকে ছেড়ে দিলেন তাঁরা চলে যাবে। এই চালেই শেষমেশ বাজিমাত করে পুলিশ।
মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যাক্তি বয়স্ক প্রতিবেশীকে ছেড়ে দিতেই পুলিশরা তাঁকে ধরে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করে দেশলাই বাক্স। সেইসঙ্গে দমকলকর্মীরা সিলিন্ডারটিকে উদ্ধার করে এলাকাটি সুরক্ষিত করে। অন্যদিকে ওই ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই নার্ভের সমস্যায় ভুগছিলেন রঞ্জন সাহু। আপাতত তাঁকে নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছে।