নতুন দিল্লি, ২০ মার্চ: অবশেষ সাত বছরের যাবতীয় দড়ি টানাটানি শেষ। শুক্রবার ২০ মার্চ ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিহাড় জেলের ফাঁসির মঞ্চে চার ধর্ষকের ভবলীলা সাঙ্গ হল (Nirbhaya gangrape-murder case Convicts Hanged)। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম চার জনের ফাঁসি হল একসঙ্গে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, ঠিক সময়ে ফাঁসিকাঠে চড়ানো হয় চার জনকে। এর পরে চলে ১২০ সেকেন্ডের কাউন্টডাউন। কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে পাঁচটায় ট্রিগার টেনে একসঙ্গে চার অভিযুক্তের ফাঁসি দেন ফাঁসুড়ে পবন। নিয়ম মেনে ৩০ মিনিট ফাঁসিকাঠেই ঝোলে দেহগুলি। তার পর কুয়োয় ফেলে দেওয়া হয় দেহ। শেষে চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করেন যে চার জনেই মৃত কি না। তিনি নিশ্চিত করলে কুয়ো থেকে দেহ তুলে নিয়ে চলে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
উল্লেখ্য, নির্ভয়া কাণ্ডের এই অপরাধীদের ফাঁসির প্রস্তুতি সারা হয়েছিল গত ডিসেম্বরেই। তিহাড় জেলের আধিকারিকদের সঙ্গে সব ব্যবস্থা পরিদর্শনও করেন পূর্ত দপ্তরের এক এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার। ফাঁসির আগের সন্ধেয় ফের খতিয়ে দেখা হয় সব। শেষমেশ আজ, শুক্রবার, ভোর সাড়ে পাঁচটায় হয়ে যায় ফাঁসি। ময়নাতদন্তের পরে সৎকার করা হবে দেহ। আরও পড়ুন- New Coronavirus Guidelines: ২২ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ আন্তর্জাতিক উড়ান, ১০-এর কম এবং ৬৫-এর বেশি বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ
শুক্রবার ভোর চারটের সময় জেলের সুপার সেলে যাওয়ার আগে সবার ঘড়ির ঘণ্টা-মিনিট-সেকেন্ড এক করে নেন। তার পর তিনি এক-একজন করে অভিযুক্তদের ডেকে তোলেন। তাদের বলা হয়, হাত গরাদের বাইরে করতে। এর পর হাতকড়া পরিয়ে সাজাপ্রাপ্তরা হাত ঢুকিয়ে নেওয়ার পর ভিতরে যান সবাই। চার জনকে স্নান করে প্রার্থনা করতে বলা হয়। এর পর নতুন কালো কাপড় পরানোর পর জেলকর্তা পড়ে শোনান আদালতের নির্দেশ। তিহারের জেল ম্যানুয়ালে বলা রয়েছে, সাড়ে পাঁচটার সময় সেখানে ব্রেকফাস্ট হয়। ফলে চার জনের কেউ সকালের খাবারের জন্য বিবেচিত হয়নি। তবে চা পেতে পারে। ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রতি আসামি পিছু ১২ জন করে সশস্ত্র পুলিশ কর্মীর প্রহরায় সকাল সওয়া পাঁচটায় সেলের বাইরে আনা হয় তাদের। পায়ে বেড়ি পরানোর পাশাপাশি মুখ ঢেকে দেওয়া হয় কালো কাপড়ে। তার আগে আরও একবার শেষ ইচ্ছে জানতে চাওয়া হয়। ফাঁসির মঞ্চের পাশে হাজির ছিলেন চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট, সুইপার এবং জল্লাদ ছাড়াও ৪৮ জন নিরাপত্তাকর্মী। ঠিক সাড়ে পাঁচটায় জেলার ঘড়ি দেখে হাত থেকে মাটিতে ফেলে দেন সাদা রুমাল। সঙ্গে সঙ্গেই লিভার টেনে চারজনের ফাঁসি সম্পন্ন করেন পবন জল্লাদ।