নতুন দিল্লি, ১৮ জুন: গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ছিলেন নরেন্দ্র মোদীর পরম বন্ধু। এনডিএ জোটের অংশ না হয়েও কেন্দ্রের সঙ্গে কোনো বিবাদে যাবেন না বলে অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি (YS Jagan Mohan Reddy) নিজেকে মোদীর প্রিয় বন্ধু বলে পরিচয় দিয়ে এসেছেন। ক'মাস আগেও চন্দ্রবাবু নাইডুর গ্রেফতারি বিতর্কে মোদীকে পাশে পেয়েছিলেন জগন। তবে এবার অন্ধ্র বিধানসভা নির্বাচনে চন্দ্রবাবু নাইডু ঝড়ে উড়ে যান জগনমোহন। এখন শুধু অন্ধ্রে সরকার গড়াই নয়, কেন্দ্রেও মোদী সরকারকে টিকিয়ে রাখার মূল কারিগর চন্দ্রবাবু। সেখানে রাজ্য ও দেশ রাজনীতির আঙিনায় এখন কার্যত গুরুত্বহীন চরিত্র প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন।
সেই জগনমোহনের গলায় এবার মোদী বিরোধিতার সুর। ইভিএম প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধীদের সুরেই সুর মেলালেন জগন। জগনমোহন দাবি করলেন, ইভিএম মোটেই নিরাপদ নয়। এবার থেকে দেশে সব নির্বাচন ব্যালট পেপারে করা উচিত। যেমনটা আগে হত। কারণ হিসেবে তিনি বললেন, বিশ্বের সব উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পেপার ব্যালটের ব্যবহার হয়, ইভিএমের নয়। স্বচ্ছ ভোট প্রক্রিয়া, ভোট প্রক্রিয়ার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে ব্যালট পেপারে নির্বাচন করা উচিত। এক্স প্ল্যাটফর্মে নিজের পোস্টে জগনমোহন সবার শেষে লেখেন, "আমরা ব্যালট পেপারে ভোটের দাবি জানাচ্ছি।"আরও পড়ুন-ওয়েনাড় উপনির্বাচনে লড়বেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, খবর আসতেই মুখ খুললেন রবার্ট বঢ়রা
প্রসঙ্গত, ক দিন আগে টেসলা, এক্স প্রধান ইলন মাস্ক বলেছিলেন, ইভিএম হ্যাক হতে পারে। তাই ব্যালট পেপারে ভোট করা উচিত। মাস্কের মত গুরুত্বপূর্ণ টেক-ভিশানারি-র ইভিএম নিয়ে এমন আশঙ্কার কথাই ভারতের রাজনীতিতে নয়া মোড় এসেছে। রাহুল গান্ধী ইভিএম-কে ব্ল্যাকবাক্স রহস্য বলে অ্যাখা দিয়েছেন।
দেখুন জগনমোহনের ইভিএম বাতিলের দাবির পোস্ট
The shift towards paper ballots, as observed in many advanced democracies, is a step in the right direction. It enhances transparency, ensures verifiability, and bolsters public confidence in the electoral outcomes. By adopting paper ballots, we can better uphold the true spirit… pic.twitter.com/2r1ddPaiNM
— YS Jagan Trends ™ Siddham (@YSJaganTrends) June 18, 2024
কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি সহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দলই ইভিএম বাতিল করে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট করার দাবি জানিয়েছে। এবার এক সময়ের মোদী শিবিরে থাকা জগনমহোনের ওয়াইএসআর কংগ্রেসও। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ৪টি আসনে জিতেছে। ফলে ইন্ডিয়া শিবিরে যোগ দিলে রাহুল গান্ধীদের পক্ষে ২৪১ জন সাংসদের সমর্থন আসবে। দুই নির্দলের সমর্থন মেলায় ইন্ডিয়া জোটের সংখ্যা এখন ২৩৭। সরকার গড়া এনডিএ-র সংখ্যা সেখানে ২৯৩। ২৬ জুন লোকসভার স্পিকার নির্বাচনে সংসদে সরাসরি শক্তি পরীক্ষা হতে পারে এনডিএ ও ইন্ডিয়া-র।
প্রসঙ্গত, এবার লোকসভার সঙ্গে হওয়া অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে ১৭৫টি আসনের মধ্যে চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি, বিজেপি ও পবন কল্যাণের জনসেনা পার্টির জোট ১৬৪টি আসন পান, সেখানে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা জগনমোহনের দল ওয়াইএস আর কংগ্রেস পায় মাত্র ১১টি আসন।