শেষ হল ইতিহাসের এক অধ্যায়ের। মারা গেলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সব চেয়ে বেশি দিন ধরে সিংহাসনে আসীন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। রাণীর পুত্র এবং উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস, নাতি উইলিয়াম এবং হ্যারি এবং তাদের পরিবার সকলেই স্কটিশ হাইল্যান্ডে (Scottish highlands)তার বালমোরাল রিট্রিটে জড়ো হয়েছিল, যেখানে তিনি তার জীবনের শেষ দিনগুলি কাটিয়েছিলেন। বাকিংহাম প্যালেসের তরফ থেকে মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করা হয়।
UK | The Queen died peacefully at Balmoral this afternoon: Buckingham Palace pic.twitter.com/4LHSNrHglj
— ANI (@ANI) September 8, 2022
১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল জন্ম হয় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের । রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও রাণী এলিজাবেথের কন্যা তিনি। এলিজাবেথের বাবা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৩৭ সালে ব্রিটেনের রাজা হন। এলিজাবেথ ছিলেন তখন ব্রিটিশ সিংহাসনের একমাত্র উত্তরাধিকারী। ষোল বছর বয়সে তিনি প্রথম জনসম্মুখে আসেন। তারপর আঠেরো বছর বয়সে সামরিক বাহিনীতে প্রশিক্ষণের জন্য যোগদান করেন এলিজাবেথ।
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি দিনে জীবনটা বদলে যায় সেই রাজকন্যার। সুদূর কেনিয়ায় বসে সেদিন শোনেন পিতা ব্রিটিশরাজ ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যু সংবাদ। সেই দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সেদিনই তিনি জেনেছিলেন রানী হওয়ার সংবাদ। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তার মাথায় ওঠে রাজমুকুট। রানী হলেন এলিজাবেথ, সে থেকেই ব্রিটেনের জনগণের হৃদয়ে ভালোবাসায়, শ্রদ্ধায় রানী হয়েই কাটিয়ে দিলেন ৭০টি বছর (১৯৫২ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত)।এর আগে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকার রেকর্ড রয়েছে রানী ভিক্টোরিয়ার। ১৮৩৭ সাল থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত ৬৪ বছর রাজত্ব করেন ভিক্টোরিয়া। তবে তাঁর সেই সময়কাল অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছেন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
বিশ্বের ১৬টি সার্বভৌম রাষ্ট্র, অর্থাৎ কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোর ( কমনওয়েলথ রাষ্ট্রসমূহ হচ্ছে : যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, বারবাডোস, বাহামাস, গ্রানাডা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন, বেলিজ, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা এবং সেন্ট কিট্স ও নেভিস) বর্তমান রানী ও রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন তিনি।
সিংহাসনে বসার পর থেকেই বহু পরিবর্তন ও বহু ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে আধুনিকায়নের পাশাপাশি দ্রুতগামী পৃথিবীর সঙ্গে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।