পোখরান, ১৬ আগস্ট: পোখরান থেকে পাকিস্তানকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর (Atal Bihari Vajpayee) প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার রাজস্থানের পোখরানের গিয়েছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (Defence Minister Rajnath Singh )। সেখানেই তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের (nuclear policy) প্রশ্নে ভারতের অবস্থান হল, – নো ফার্স্ট ইউজ (No First Use)। অর্থাৎ ভারত আগে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করবে না। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে তা তখনকার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।” তাৎপর্যপূর্ণ হল, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রসঙ্গে এ দিন শুধু সংবাদমাধ্যমের সামনেই এ কথা বলেননি রাজনাথ সিং, তিনি রীতিমতো টুইটও করেছেন। সেই কারণেই আরও বেশি কৌতূহল তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক মহলে। আরও পড়ুন-Article 370 Move: ৩৭০ ধারার বিলুপ্তির বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ, আবেদনকারীর অভিযোগ বোঝেননি শুনানিতে জানালেন প্রধান বিচারপতি
উল্লেখ্য, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে যখন কোনওভাবেই ভারতকে জব্দ করতে পারল না পাকিস্তান, তখন যুদ্ধের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল ইমরান খানের সরকার। এদিন পোখরান থেকে সমস্ত মৌনতা ভেঙে তারই জবাব দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অনেকের মতে, রাজনাথ এ দিন যে কথা বলেছেন, তাতে কৌশলগত অবস্থান বদলের বার্তা থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ, এটা শুধু রাজনাথ সিংহের বক্তব্য নয়। হতে পারে মোদী সরকারের অবস্থান। কেন না এর আগে প্রয়াত প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পার্রিকরও একই মন্তব্য করেছিলেন। পোখরানে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করা ছিল অটল বিহারী বাজপেয়ী জমানার মাইলফলক ঘটনা। তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক ও কৌশলগত বার্তাও দিতে চেয়েছিলেন বাজপেয়ী। বোঝাতে চেয়েছিল, ভারত প্রকৃতই পরমাণু শক্তিধর দেশ। ওই ঘটনার পর ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
Defence Minister Rajnath Singh in Pokhran: Till today, our nuclear policy is 'No First Use'. What happens in future depends on the circumstances. https://t.co/nlPTQ5vLUm
— ANI (@ANI) August 16, 2019
কিন্তু বাজপেয়ী তো বটেই পরবর্তী কালে ইউপিএ জমানার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও বারবার বলেছেন, যে ভারত কোনও ভাবেই আগে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না। তা ভারত সরকারের শুধু নয়, এ ব্যাপারে দেশের রাজনৈতিক সর্বসম্মতিও রয়েছে। বস্তুত নয়াদিল্লির সেই অবস্থানকে স্বীকৃতি দিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জও। পরবর্তী কালে ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির ক্ষেত্রেও নয়াদিল্লির সেই অবস্থান বিশ্বাসযোগ্যতার ভিত হিসাবে কাজ করেছিল। তবে রাজনাথ সিংয়ের আজকের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে কি সত্যিই পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রশ্নে কৌশলগত অবস্থান বদলের ইঙ্গিত দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। নাকি পাকিস্তানকে সমঝে দিতে এটা শুধু কথার কথা মাত্র।