নতুন দিল্লি, ১৪ ফেব্রুয়ারি: বছর ঘুরে ফের এসেছে সেই দিন। যেদিন জইশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী বোমারু কেড়েছিল ৪০ জন জওয়ানের প্রাণ। বিনাযুদ্ধে শহিদ হওয়ার এই দগদগে ক্ষত শুকিয়ে যাওয়ার জন্য ৩৬৫টা দিন যথেষ্ট নয়। প্রতিমুহূর্তে চলচে রক্তক্ষরণ। শহিদের পরিবার এই নিষ্ফল মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি। পলাশীপাড়ার সিআরপিএফ জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের পরিবারের অবস্থাও একই। বোন ঝুম্পা বিশ্বাস বলছিলেন, ‘দাদা চলে যাওয়ার পর মা-বাবা একেবারে ভেঙে পড়েছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটা আমাদের কাছে এখন অভিশাপ। জানি না শুক্রবার কী ভাবে সামলাব মা-বাবাকে। আজ সেই দিনেই ৪০ জন জওয়ানের স্মৃতির প্রতিশ্রদ্ধা জানাবে সিআরপিএফ জওয়ানরা। পুলওয়ামা হামলার স্মরণে লেথোরাক্যাম্পে তৈরি হয়েছে শহিদ মিনার। এদিনই তার উদ্বোধন।
পুলওয়ামার ওই হামলার পর থেকে ভাল নেই কাশ্মীর। একের পর এক বিপত্তি ঘটেই চলেছে। ঘটনাস্থলের অদূরেই উসমানের মুদির দোকান। সেদিন সকালটা মনে পড়লে এখনও তাঁর অন্তরআত্মা কেঁপে যায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে জওয়ানদের ছিন্নভিন্ন শরীর চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল কয়েকটা টুকরো উড়ে এসে পড়ে তাঁর দোকানের সামনেও। সেই দৃশ্য ভুল ডাক্তার বদ্যি কিছুই বাকি রাখেননি। তবে সুস্থতার কোনও লক্ষণ নেই। এখন ঘুমের মধ্যেই শুনতে পান সেই মর্মান্তিক শব্দ, কেঁপে ওঠেন তিনি। বিস্ফোরণস্থল থেকে একশো গজের মধ্যে বাড়ি মুজিবা আখতার (৬০)-এর। তাঁর কথায়, ‘‘একটা বিস্ফোরণ আমার গোটা জীবনটা বদলে দিয়েছে। এমন একটা ঘটনায় শুধু পুলওয়ামা নয়, গোটা উপত্যকার কেউ খুশি হতে পারেন বলে আমি মনে করি না।’’ বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাড়ির বাইরে আসা মাত্র ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে থমকে যান মুজিবা। বলেন, ‘‘সারাটা দিন আমি একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। মনে হচ্ছিল, ধ্বংসের দিন এসে গিয়েছে।’’ আরও পড়ুন-COVID-19 In India: দেশের প্রথম করোনা আক্রান্তকে ছাড়ল আলাপ্পুঝা মেডিক্যাল কলেজ, বাকি ২জনও সুস্থ হওয়ার পথে
Bravehearts of CRPF who made the supreme sacrifice and attained martyrdom in the Pulwama attack on 14/02/2019. pic.twitter.com/eHrPnYaSGV
— 🇮🇳CRPF🇮🇳 (@crpfindia) February 15, 2019
রাস্তার উপরে জায়গাটা এখনও চুনের দাগ দিয়ে ঘিরে রাখা। তার মধ্যে কয়েকটি পাথর সাজিয়ে একটা স্মারক তৈরির চেষ্টা। এক বছর আগে এই পুলওয়ামায়তেই সিআপিএফ কনভয়ে জইশ জঙ্গির বোমা বোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ৪০ জন জওয়ানের সমাধি রচিত হয়েছিল। যে ক্ষত শুকিয়ে যাওয়ার নয়।