নতুন দিল্লি, ২১ এপ্রিল: দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে করোনা টেস্ট ধীর গতিতে চালানোর জন্য কার্যত কেন্দ্রের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল রাজ্য সরকার। কলকাতার নাইসেড থেকে দু'সপ্তাহ আগে যে টেস্ট কিট এসেছে সেগুলিতে ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল নবান্ন। এরপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। টেস্ট কিট নিয়ে অভিযোগ অবশ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, আরও বেশ কিছু জায়গা থেকে এসেছিল। এরপর মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এর পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি রাজ্যেই আগামী দুদিন র্যাপিড টেস্ট স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, 'আগামী দুদিন দেশে কোনও র্যাপিড টেস্ট করা হবে না। একটি রাজ্য থেকে ত্রুটিপূর্ণ কিটের অভিযোগ এসেছে। তা নিয়ে তদন্ত হবে। তারপর অ্যাডভাইসরি জারি করা হবে।' গত রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর থেকে এই বিষয়ে একাধিক ট্যুইট করা হয়। ত্রুটিপূর্ণ টেস্ট কিটের কারণে রাজ্য সমস্যার মধ্যে পড়ছে বলে ট্যুইটে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, নাইসেডের পাঠানো ত্রুটিপূর্ণ কিটের কারণে দেশের অন্যান্য ল্যাবগুলিও সমস্যার মধ্যে পড়ছে বলেও রাজ্য সরকার জানিয়েছে। আরও পড়ুন, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাদের করোনা স্পর্শকাতর এলাকা খতিয়ে দেখতে বাধা দিয়েছে', অভিযোগ জানালেন আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দলের প্রধান
বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন করোনা রুখতে টেস্টই একমাত্র উপায়। লকডাউন অর্থহীন হয়ে যাবে যদি না বেশি সংখ্যায় টেস্ট করা হয়। অথচ এ রাজ্যে টেস্টের পরিমান যথেষ্ট কম বলেই অভিযোগ করছে বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের তরফ থেকেও। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে কিট নিয়ে অভিযোগ নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস আন্তঃমন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় দলের (আইএমসিটি) পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আচমকা অভিযানের নিন্দা করে। জুম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকদের উদ্দেশে টিএমসির সংসদ সদস্য ডেরেক ও ’ব্রায়ান এবং সুদীপ ব্যানার্জি জানান, কেন্দ্রীয় দল কলকাতা এসে পৌঁছনোর তিন ঘন্টা পরে মমতা ব্যানার্জিকে তাদের সফর সম্পর্কে জানানো হয়। এতেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দেন তিনি।
এর উত্তরে অপূর্ব চন্দ্র অ্যাডেল সিকি এমওডি এবং আইএমসিটি দলের প্রধান জানান, "আইএমসিটির দলগুলি মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানের মতো অন্যান্য রাজ্যে গিয়েছে। সেখানে তারা রাজ্য সরকারের পুরোপুরি সমর্থন পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন সহযোগিতা করছে না তা আমি বুঝতে পারছি না। সে কারণে আমরা রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি এসেছেন।" তিনি আরও বলেছেন, "আমরা গতকাল সকালে এখানে এসেছি এবং তারপর থেকে আমরা রাজ্য সরকারকে আমাদের সমর্থন জানাতে বলছি এবং এখন এটি একদিনেরও বেশি হয়েছে। আমরা কেবল নবান্ন এবং নাইসেডে পরিদর্শন করেছি। মাত্র এই দুটি জায়গায় আমরা পরিদর্শন করেছি," দলগুলি পশ্চিমবঙ্গ সরকার মূল্যায়নের জন্য করোনাভাইরাস স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল।